২৬শে মার্চ হতে ১৬ই ডিসেম্বর, মুক্তি যুদ্ধের কাল।
৪৬ বছর আগের কথা, উনিশশো ৭১ সাল।
মর্মান্তিক সেই দুঃখের কথা, তোমায় যদি বলি।
তা শুনে তুমি কাঁদবে কিন্তু! কেঁদেছে সেদিন 'কলি'।

শুনতে চাইলে বলি, আর মৃদু পথে চলি-

নয় মাস ধরে যুদ্ধ হলো, সবুজ বাংলাদেশে।
স্বাধীনতার সেই স্বাদটা এলো, অনেক ক্ষতি শেষে।
প্রেক্ষাপট তো অনেক লম্বা, কথাও অনেক বড়।
শুনতে চাইলে এসো তুমি, হাতটা কষে ধরো-

রফিক, শফিক জান দিলো ৫২ র, ভাষা মিছিলে।
এনে দিলো এই মাতৃভাষা, গায়ের রক্ত ঢেলে।
সেটা দিয়েই বাঙ্গালীর আন্দোলন, হলো সুচনা।
পরবর্তীতে আরও ঘটলো কত, জ্বালাময় ঘটনা।

৬৬'র ছয়দফা, ৬৯ এর, গনঅভ্যূত্থান।
অনেক সিঁড়ি বেয়ে এলো, ৭০ এর নির্বাচন।
হলো আওয়ামী লীগের এক মহা নিরঙ্কুশ বিজয়।
কিন্তু ক্ষমতা ছেড়ে দিতে, পাক দের খুব ভয় হয়।

নাম নিয়েছে পাক বাহিনী, কাজ তাদের না'পাক।
২৫শে মার্চের কালরাতে তারা, মারলো যে কয় লাখ!
কলঙ্কিত জাত- ধৃষ্টতম আচরণ করলো ওরা।
তাই তো বাঙ্গালীর ভাবনা এলো, চলবে ওদের ছাড়া।

দামামা উঠলো বেজে- বাঙ্গালীর, "সহ্য করা" আর নয়।
গর্জে উঠিলো মুজিবের ডাকে, নেইকো ক্ষতির ভয়।
পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে তাই, ভয়ঙ্কর জ্বলে উঠা।
বেড়িয়ে পড়লো বাঙ্গালী- সব নিয়ে লাঠি সোটা।

কে ঠেকায় বাঙ্গালীকে আর! আছে কার বুকের পাঠা?
শত্রু তারাতে মা-বোনেরাও, হাতে তুলে নিলো ঝাঁটা।
বাঙ্গালীর রক্তে রঞ্জিত হলো, বাংলার এ পথঘাট।
মা-বোন,ভাই হারা সত্যগল্পে, ভরেছে বাংলার মাঠ।

ভাইকে হারিয়ে বোন কেঁদেছে, বোন হারিয়ে ভাই।
ছেলেহারা মা ডুঁকরে কেঁদেছে, ছেলেকেই তাঁর চাই!
স্বামী হারিয়ে বিধবা হলো, কেউ হারালো বউ।
দুঃখটা তাঁর একান্ত নিজের, বুঝবে কি আর কেউ!

বিশ্বজুড়ে বাঙ্গালী সৃজিলো, বিষ্ময় সে খবর!
রচিলো ইতিহাস তারিখটা হলো, ১৬ই ডিসেম্বর।
নিজেকে খুঁজে পাওয়ার সাথে, চিনলো আপন স্বত্ত্বা।
স্বাধীনতার মাঝে শান্তি, খুঁজে পায় মানবাত্মা।

বাঙ্গালী পেলো স্বাধীনতা, স্বাধীন হলো দেশ।
কোনো কালে এই অমর গল্প, হবে না কো শেষ।
®
[সমিল মুক্তক]
০৫/৫/২০১৭
দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি।