খরচ কমানো হুজুগ উঠেছে দেশে
তোমারো চাকরি যায় যদি এতে শেষে।
যাবেই না হয়। চিন্তু কিসের অত?
যতই ভাববে বাড়বে ভাবনা তত।
এতদিন ধরে করেছ চাকরি ঢের
এখন না হয় মায়ায় কাটালে এর
বয়স তোমার চল্লিশ নয় পুরো
এখনই নিজেকে মনে করো কেন বুড়ো?
শরীর খারাপ হবে দিনরাত ভেবে
আমি বলি, তুমি ব্যবসায় পড় নেবে।
এই গাঁয়েতে নেই ডিসপেনসারি মোটে
ওষুধ কিনতে সকলে শহরে ছোটে।
ওষুধের ছোটো দোকান একটা খুলে
চাকরি করার দুর্ভেোগ যাও ভুলে।
ভারি তো মাইনে, গোটা সত্তর টাকা
তার জন্যেতে বন্দীর মত থাকা।
বেলা আটটার ডালভাত খেয়ে দুটি
ট্রেন ধরবার জন্যেতে ছুটোছুটি।
রাত আটটার ফের কলকাতা থেকে
এতে কি কখনো শরীর স্বাস্থ্য টেঁকে?
কাজ নেই আর চাকরি তোমার করে
চৌধুরীদের খগেন বাবুকে ধরে।
চৌরাস্তার মোড়ে একখানা ঘর
ভাড়া নাও তুমি। আমি দেব তারপর।
আসবার আর মাল কেনবার টাকা
কোথা পাবো? কেন? গয়নার রাশি রাখা।
কিসের জন্যে? কাজেই যদি না লাগে
কথা শুনে বাপু হাড় জ্বলে যায় রাগে।
ঘর খরচায়-দরকার ফি মাসেই?
সব বাড়িখানা জুড়ে থেকে কাজ নেই।
বার মহলটা সারিয়ে সুরিয়ে নিয়ে
রান্নার ঘর করো গেটে তুলে দিয়ে।
এবাড়ির যদি ভাড়া দাও আধখানা
গোটা কুড়ি টাকা মাসে ঠিক পাব জানা।
মনে জোর নিয়ে লাগ, নিশ্চয় হবে
এই মাসে সব ঠিকঠাক করো তবে।।
(রাধারাণী দেবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা সংকলন থেকে সংগৃহীত)