সাঙ্গ হয়েছে রণ।
অনেক যুঝিয়া অনেক খুঁজিয়া
শেষ হল আয়োজন।
তুমি এসো এসো নারী,
আনো তব হেমঝারি।
ধুয়ে-মুছে দাও ধূলির চিহ্ন,
জোড়া দিয়ে দাও ভগ্ন-ছিন্ন,
সুন্দর করো সার্থক করো
পুঞ্জিত আয়োজন।
এসো সুন্দরী নারী,
শিরে লয়ে হেমঝারি।
হাটে আর নাই কেহ।
শেষ করে খেলা ছেড়ে এনু মেলা,
গ্রামে গড়িলাম গেহ।
তুমি এসো এসো নারী,
আনো গো তীর্থবারি।
স্নিগ্ধহসিত বদন-ইন্দু,
সিঁথায় আঁকিয়া সিঁদুর-বিন্দু
মঙ্গল করো সার্থক করো
শূন্য এ মোর গেহ।
এসো কল্যাণী নারী,
বহিয়া তীর্থবারি।
বেলা কত যায় বেড়ে।
কেহ নাহি চাহে খররবিদাহে
পরবাসী পথিকেরে।
তুমি এসো এসো নারী,
আনো তব সুধাবারি।
বাজাও তোমার নিষ্কলঙ্ক
শত-চাঁদে-গড়া শোভন শঙ্খ,
বরণ করিয়া সার্থক করো
পরবাসী পথিকেরে।
আনন্দময়ী নারী,
আনো তব সুধাবারি।
স্রোতে যে ভাসিল ভেলা।
এবারের মতো দিন হল গত
এল বিদায়ের বেলা।
তুমি এসো এসো নারী,
আনো গো অশ্রুবারি।
তোমার সজল কাতর দৃষ্টি
পথে করে দিক করুণাবৃষ্টি,
ব্যাকুল বাহুর পরশে ধন্য
হোক বিদায়ের বেলা।
অয়ি বিষাদিনী নারী,
আনো গো অশ্রুবারি।
আঁধার নিশীথরাতি।
গৃহ নির্জন, শূন্য শয়ন,
জ্বলিছে পূজার বাতি।
তুমি এসো এসো নারী,
আনো তর্পণবারি।
অবারিত করি ব্যথিত বক্ষ
খোলো হৃদয়ের গোপন কক্ষ,
এলো-কেশপাশে শুভ্র-বসনে
জ্বালাও পূজার বাতি।
এসো তাপসিনী নারী,
আনো তর্পণবারি।
(উৎসর্গ কাব্যগ্রন্থ)