বাবা বলেছিলেন —
খুব ভোরে আমি জন্মেছিলাম ৷
সূর্য্য ওঠার আগে আগে কাঁদতে কাঁদতে
আমি স্বাগত করেছিলাম দাদির কোল ৷
মার সুখানুভূতির বেদনা কিংবা চোখের
কোণে ছিল আনন্দের হাসির চিহ্ন ৷
তারপর উঠানের মাটি গড়াগড়ি দিতে
দিতে হামাগুড়ির বয়স হতে বাবার
বাড়ির সব কিছু আত্মীয়ের মতো ৷
রক্তের ধারার মতো, হৃদপিন্ডের মতো ৷
লতাপাতা মাড়িয়ে বাহির বাড়ি কিংবা
ভেতর বাড়ির একুল ওকুল দুই চরণে
পদার্পণ করে, মার সযতনে লাগানো
লাউ ডগার সজীব ডাটার মতো
বাড়তে থাকি আনন্দে — উন্মুক্ত স্বপনে ৷
বোনের পোষা বিড়াল, ডালে ডালে ভোরের
পাখির অবাধ বিচরণে সঙ্গ ছেড়ে —
একদিন আমিও ছেড়ে যায় সুখ সদন !
আমিও ছেড়ে যাই মার রান্নার ঘ্রাণ
পুকুর ঘাট, শীতল জল — নারিকেল, জাম এবং ডাংগুলির দিনগুলো ৷
তারপর, তেমন করে আর বাড়ি ফেরা হয়নি ৷
অথবা হয়ে ওঠে না ৷
সময় নিয়ে চলে নগরে নগরে — দালানে
দালানে — ভিড়ে ভিড়ে ৷
আমাকে বাস করা লাগে অনাত্মীয়ের সাথে
নিয়ম মেনে, শান্তির সন্ধানে সন্ধানে ৷
একবার বাড়ি ছাড়লে—
সহজে আর বাড়ি ফেরা হয় না!
বাড়ির দোলনায় বসে দক্ষিণের হাওয়া
ফুল— ফসলের মন মাতানো সুরভী —
এখন শুধু মনে পড়ে অনুভূতিতে ৷