সেদিনই চলে গিয়েছিলে তুমি
যেদিন চলে গেলে নিমেষ আরো হয়ে উঠে
মুহূর্তের চেয়ে বড় ও কর্কশ,
দিনগুলি থেমে যায়, মুষড়ে পড়ে রাত;
টিনের চালের থেকে বৃষ্টির আলাপ নিয়ে
সরে যায় মেঘের মল্লার।
চলে গিয়েছিলে তুমি, বাবা।
কাঁটামেহেদীর নিচে বিন্দু বিন্দু ছায়া আরো বড় হতে হতে
এগিয়ে যাচ্ছিল, যেদিকে মিলিয়ে যায় রোদ।
অপসৃয়মান সেই রৌদ্র-ছায়ার ভিতরে রেখে গিয়েছিলে
তুমি আমাকে, ভোরের খোঁজে হতোদ্যম এক রাত্রির ভিতরে।
আকাশ ঝরোকা ছিলে তুমি বাবা--
আকাশ ছাড়িয়ে আরো এক বিশাল আকাশ
মাঠ পেরিয়ে দিগন্তের মাঠ,
মেলায় কেনা বাঁশি, সন্ধ্যার শ্মশানে পথহারা বালকের চোখে
নীল জোনাকির আলো
পেয়ারা গাছের ছায়া পশ্চিমের জানালার গ্রীলে
জ্বরের কাতর ঘোরে নিশিন্দার পাতা
রাতজাগা হারিকেন পড়ার টেবিলে।
হাতের রেখার মত পথের জঙ্গলে রেখে গিয়েছিলে
তুমি, কোনদিকে গেছে কোন পথ
মনে নেই কোনদিকে আমি।
বালকের ছবির পাতায় নিভে যায় রোদ
কান্নার রোল ওঠে পাতার নিঃশ্বাসে
নতচোখে হেঁটে যায় নিঃশব্দে বাতাস।
মুখচ্ছবি নেই কোন, শুধু স্মৃতির পাথার।
তুমি চলে গেলে বাবা, চিরবালকের ছবির খাতায়
বলো তবে কে থাকে আর?