ভোরের শিশিরে ডানা ভিজিয়ে
একদিন উড়ে গিয়েছিলাম,
সে আমার প্রথম আকাশ ছোঁয়া,
প্রথম ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম।
জন্মেছিলাম যে সবুজ শাখায়,
সূর্যের প্রথম আলোয়,
সেই গাছই ছিল আমার নীড়,
আশ্রয়ের মায়াময় ছায়া।

সকাল গড়াল রোদের দাহে,
শৈশব ফুরালো খেলার ছলে,
নদীর বাতাস ডেকে নিলো
দূরের ডানা মেলার দলে।
ডাল ছেড়ে উড়তে শিখলাম,
আকাশে পেলাম নিজের সুখ।
নীড়ের কথা ভুলতে চাইলাম,
রঙিন ডানায় উড়লাম,ভুললাম সব।

দুপুর এল দাবদাহ নিয়ে,
স্বপ্নের নেশায় বিভোর তখন,
মাঠের ওপার, অরণ্যের কোণে,
কখনও হারিয়ে চঞ্চল বনে,
যৌবনে উন্মত্ত বাতাসে খেলেছি
তীব্র রোদের খেলা, বুঝিনি
অবহেলায় কখন গেলো বেলা।

বিকেল নামল, পথ ছোট হলো,
উড়তে উড়তে ক্লান্ত প্রাণ,
নিভে এলো রৌদ্রতেজ,
ফিরতে চাইলাম আপন কুলায়,
সবুজ পাতার ছায়ায়, ফিরে
শ্বাস নেব একটুখানি,
যেখানে প্রথম ডানা মেলেছি,
সেই ডালেই ফিরব আমি।

গোধূলির শেষে রাত যখন এল,
ফিরে এলাম চেনা গাছে,
কিন্তু কোথায় আমার নীড়?
পড়ে আছে বৃদ্ধ ভাঙা শাখা।
ঝড় এসে কেড়ে নিয়েছে সব,
শূন্য আজ আমার ঠিকানা।
পৃথিবীর আকাশ আজও আছে,
শুধু নেই শেষ আশ্রয়খানা।

অন্য গাছে অন্য শাখায় অন্য নীড়ে
আমার নবীনেরা গল্পে মেতেছে,
নক্ষত্ররা জ্বলেছে দূর আকাশে,
বাতাস হাসছে নীরবে, হঠাৎ
আকাশ যেন বলে উঠলো;-একদিন
তোদের সবার শেষ ঠিকানা আমি।
শুনে খুশি হলাম, শেষ বারের মত আবার উড়লাম
হারিয়ে গেলাম আকাশে, আঁধারে, অন্তিম আশ্রয়ে।