ভালোবাসা কি কখনো হারায়?
শাহজাহান মমতাজের জন্য গড়েছে তাজমহল,
এক অনন্ত শ্বেতশুভ্র বিলাপ—সময়ের কবরে দাঁড়িয়ে থাকা ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি।
যেন শিলা-পাথরের প্রতিটি স্তরে বন্দী রয়েছে এক অতৃপ্ত আকুতি।
রোমিও-জুলিয়েটের করুণ পরিণতিতে আজও ভারোনার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে,
তাদের সমাধির নীরবতা যেন প্রতিধ্বনিত হয় প্রেমিক হৃদয়ে।
আর আমি?
আমি গড়ে তুলবো এক অনন্ত স্মৃতিস্তম্ভ,
যেখানে শ্বেতপাথর নয়, অশ্রু হবে ভিত্তিপ্রস্তর।
তোমার অবহেলার প্রতিটি ছোঁয়া রূপ নেবে
একেকটি ধূসর ভাস্কর্যে,
প্রতিটি প্রত্যাখ্যানের আঘাত হবে
সেই স্তম্ভের গভীরতম শিলালিপি।
তুমি যে কণ্ঠে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছো,
সেই কণ্ঠস্বর চিরতরে প্রতিধ্বনিত হবে আমার স্মৃতির মন্দিরে।
যন্ত্রণা আর বিষাদ বেদনায় গাঁথা সেই সৌধ
কেবল একটি প্রেমিকের না-পাওয়ার আক্ষেপ নয়,
বরং এক শাশ্বত ভালোবাসার নীরব ঘোষণা।
আবার হিরোশিমার ভয়াল শব্দে পাখিদের বাচ্চারা মরে যাবে,
নাগাসাকির ধ্বংসস্তূপে পুড়ে যাবে নবজাতকের শ্বাস,
পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়বে এক নিঃশব্দ ক্রন্দন।
চেরনোবিলের বিষাক্ত বাতাসে বিবর্ণ হবে গাছের পাতা,
সমুদ্রের বুকে ভেসে উঠবে মৃত মাছের সারি।
প্যালেস্টাইনের ধুলোয় হারিয়ে যাবে খেলতে থাকা শিশুরা,
সিরিয়ার ভগ্ন ইটের নিচে চাপা পড়বে কারও স্বপ্ন।
পৃথিবী ধ্বংস হবে,আমি মারা যাবো…
আবার জন্ম নেবো, আবার মারা যাবো,
কিন্তু আমার ভালোবাসা মৃত্যুঞ্জয়,
চিরন্তন,শাশ্বত, অম্লান।
তোমাকে নিয়ে ভাবনা আমার কোনো কালেই ফুরাবে না,
সে তুমি যতই অবহেলা করো।
আমি থামবো না। জেনে গেছি
ভালোবাসার শান্তি দুঃখে,
যন্ত্রণাই জীবনের জ্বালানি, মৃত্যু—জীবনের গন্তব্য।
আর ভালোবাসা আত্মার কোটি জন্মের শান্তি…।