আমি কি বেঁচে আছি, নাকি শুধুই শ্বাস টানি—
অকারণে, অবচেতনে, নির্বিকার এক অভ্যাসে?
জীবনের পথে কাঁটা বিছানো,
পায়ের নিচে রক্তাক্ত চিহ্ন,
কিন্তু ব্যথার অনুভূতিও যেন বোধহীন,
অন্ধকার আচ্ছন্ন করে রেখেছে মায়ার শ্বাসরোধী পর্দা।
স্বপ্নগুলো—ধুলো জমা আয়না,
যেখানে প্রতিফলন নেই, কেবল অস্পষ্ট ছায়া।
সকালের আলো আর ছুঁয়ে দেখে না,
বরং রাতের গভীরে তলিয়ে যায়—
ঝিঁঝি পোকার উন্মাদ চিৎকারে,
যেখানে অবজ্ঞার শীতল শিখা
মনখারাপের সুরে নাচে।
আমি কি হাসি?
নাকি ঠোঁটের কোণে মৃত মুখোশ পরে থাকি?
চোখের জল শুকিয়ে গেছে,
তবে ভেতরে বয়ে যায় এক অনির্বাণ ঝড়—
অশান্তি, অবসাদ, একাকীত্বের রুক্ষ ঢেউয়ে।
আমার দিনগুলো যেন অনিঃশেষ মরুভূমি,
যেখানে শুরু আর শেষের সীমানা মুছে গেছে,
সময়ের দহন একঘেয়ে বালির মতো—
চোখে ঢুকে যায়, অথচ দেখায় না পথ।
সকাল আসে, রাত নামে,
কিন্তু কোনো গল্প গড়ে না,
শুধু নীরবতা গুমরে কাঁদে,
শুধু ক্লান্তি নখর বসায় রক্তশূন্য হৃদয়ে।
আমি কি আশা করি?
নাকি প্রতিদিন একটু একটু করে ক্ষয়ে যাই?
একদা বুকের গভীরে যে আগুন জ্বলত,
আজ তা ধূসর ছাই,
আমি হাতড়াই—
কোনো এক নিঃশেষ স্ফুলিঙ্গ খুঁজে পাবার আশায়।
আমি বেঁচে আছি—
কিন্তু হতাশার কারাগারে শিকলবন্দি,
একটি নামহীন জীবন বয়ে বেড়ানো,
যেখানে স্বপ্নেরা শবদেহ হয়ে শুয়ে থাকে,
আর প্রতিটি নিঃশ্বাস যেন এক তীব্র বোঝা।