আপন শিখা জ্বালিয়ে,
অন্ধকারে পথ হারানোদের জন্য
আলোর সেতু হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
তোমরা দেখেছো?
আমার নাম মোমবাতি,
প্রতিটি উত্তপ্ত শিখা,
আমার অস্তিত্বের ক্ষয় করতে থাকে,
প্রতিটি দীপ্তি, প্রতিটি উষ্ণতার ঝাঁকুনি,
আমার মৃত্যুর ঘন্টা বাজিয়ে চলেছে।

আমি দেখেছি—
ছায়ার কোণে লুকিয়ে থাকা অশুভ ভয়,
এক শিশুর বিস্মিত চোখে,
যতটা অজ্ঞতা, ততটাই শুদ্ধতা—
এক ক্লান্ত পাঠকের স্তব্ধ চোখে,
গভীর রাতের নিরব অধ্যয়ন—
এক প্রেমিকের অশ্রুতে লেখা শেষ চিঠি,
যেখানে প্রেমের সব বেদনা
শব্দে বন্দী হয়ে যায়।

আমি ছিলাম গোপন প্রার্থনার নিঃশব্দ সঙ্গী,
কারো অশ্রু দিয়ে ভিজে যাওয়া রাতের সঙ্গী,
এক একাকী প্রান্তরের গাঢ় অন্ধকারে,
আমি ছিলাম সেই শেষ প্রাপ্তির এক উষ্ণ আলিঙ্গন।
কোনো ভয়ার্ত অন্ধকারে একমাত্র অবলম্বন।

শেষে, যখন আমার শিখা ক্ষীণ হয়ে আসে,
প্রতিটি মোমের বিন্দু গলে পড়ে—
বুঝি, এই আলো নিভে যাবে আমার
মৃত্যু এসে  আপন করে নিবে আমায়,
অথবা এই নিভে যাওয়া শিখার মধ্যে
অলক্ষ্যে, শান্তভাবে সলিল সমাধি নিবে আমার অস্তিত্ব।

ভয় লাগে নিঃশেষের অন্তিম মুহূর্তে।
নিভে যাওয়া সেই আলোয়
কেউ তিমিরে আতকে উঠবে না তো!
আমি মুছে যাব, দুঃখ নেই,
কিন্তু ভয় লাগে যাদের জন্যে জ্বলেছিলাম
তারা ভুলে যাবে না তো!