হেমন্ত বাতাস মাঝে মাঝে মাতন তোলে
প্রান্তরে বনে-মনে-মিশে
শীত-গরম এ সন্ধি আবেশে,
এখন আমি ঘুড়ির বাগ ডোর দিলাম খুলে।
তোমার উদ্দেশ্যে প্রিয়, তোমার অচিন দেশে।
আমার ঘুড়ি এঁকে বেঁকে নিশানা লয়
আমি সূতা ছাড়ি নিপুন হাতে
হুঁউস করে বাতাস কেটে যেতে যেতে
লেজ দুলিয়ে ধায়, অনেক উচ্চয়।
স্থির হয়ে রয় "আঁকা" আঁখিতে চেয়ে,
নীচ্ থেকে দেখি আমি তায়
ভূজঙ্গের মত লেজটি নাচায়;
হেলে দুলে খেলে- আমি সূতা গোটাই লাটায়ে।
ঐ ঘুড়িতে লিখে দিলাম আমার খবর
তোমার কাছে, তোমার নাম লিখেছি সোনার রঙে,
শলাকাতে বেঁধে দিলাম কাগজ কলম সঙ্গে,
তোমার কথা লিখে দিও ঐ ঘুড়ির অঙ্গে।
মান্জা ডোর বেঁধেছি, খুবই শক্ত দীর্ঘ
হিমেল হাওয়া যদি দয়া করে
এ বাহককে টেনে নেয় অসীমের পাড়ে?
তবে আমার হাতে যেন নেমে আসে স্বর্গ!
মনকে শাসাই, রাখি শান্ত চুপ
পাছে একটু ভুল হয় চালনাতে
অপলক দৃষ্টি ধরি ঐ দূর নীলিমাতে
তুমি কিন্তু লিখে দিও বঁধূ আছো কি রুপ?
আমি শীত বাতাসে ধূ ধূ ময়দানে দাঁড়িয়ে
ভুবন ঘুরে শেষে খুঁজি তোমায় উপর আকাশে
মন যেথা কয় সেই সে আদেশে
আশায় আশায় থাকি দু হাত বাড়িয়ে।
হায়রে ঘুড়ি, কখন কেঁটে বুঝি ডোর
অদৃশ্যে মিলায়। দেখিনা তারে আর?
হাওয়া নেমে যায়, আসে অন্ধকার
তোমার খবর মিলেনা, হে প্রিয় মোর।