ছোট্ট একটা একতলা ঘর,
সামনে বসে একটা মেয়ে
গায়ের রঙে ঘনিয়েছে আঁধার;
দেখছে শুধু চেয়ে চেয়ে !
তার আর আমার মাঝখানে
রয়েছে একটা ছোট্ট টেবিল,
তারই উপর রকমারি খানা
সঙ্গে আছে ডিমের ডেভিল !
এসব দেখলে বেশ লোভ হয়
পারছিনা শুধু মেনে নিতে,
সরকারী এমপ্লোয়ী হয়ে
সিঁদুর দিতে হবে এর মাথাতে ?
আমি শিক্ষিত, যথেষ্ট শিক্ষিত
নইলে সরকারী চাকরী পেতাম না-
আমি সুন্দর, যথেষ্ট সুন্দর
নইলে মেয়ের মা এমন তোষামোদ করতো না !
সেই অঘ্রানেই বিয়ে হল,
বাঁধা হল মোদের জুটি
সেইসঙ্গে লাখ খানেকের সেভিংস
মেয়ের বাবা কথা রাখতে বেজায় খাঁটি !
পরদিন রাতেই বুঝেছিলাম
মেয়েটা একটু একঘেঁয়ে-
অনেকটা পুরোনো ফাইলের মতো
ধুলো পড়া, চলা ভালো একে এড়িয়ে -
ভরণ-পোষনের দায়িত্ব নিয়েছি
সেকি কম কথা নাকি ?
ওর ও তো কিছু দেবার আছে
ওর আবার সবেতেই ন্যাকামি !
বদলে গেছে অনেক কিছু
ঘুষ নেওয়ার অপরাধে চাকরটা আর নেই;
সেভিংটা ও দিয়েছি ভেঙে
সংসার চালানোর মতো হাতে কিছুই নেই।
ননীর মা এখন মেশিন চালায়
দু-চার টাকা রোজগার করে-
শান্তিতে TV দেখতে দেয় না
চোখের সামনে ওরা খেলা করে,
সেদিন রাতে বারান্দায়,
কিছুতেই আর ঘুম আসছে না,
ভাবলাম, দুদিনের জন্য বেড়াতে এসেছে বলে
ওদের শ্বশুর বাড়ীতেই রেখে আসি না ?
আজকাল আগের মতোই সন্ধ্যে হয়,
আগের মতো TV দেখিনা-
চা খাওয়ার অভ্যাসটাও বদলেছে
সময় সময় কড়া চা পাইনা।
বন্ধু গুলোও এখন এড়িয়ে চলে
যারা শ্যামা কে নিয়ে হাসতো !
বিছানার ওপাশে এখন কোলবালিশ
যেখানে আগে শ্যামা ঘুমোতো।
আলমারীটা আর গোছানো নেই
রান্নাঘরটা ভীষন ছন্নছাড়া
সেই দুটো চোখ বিছানায় জেগে নেই
যখন ঘুমিয়ে পড়ে সারা পাড়া।
ওর শূন্যতা উপলব্ধি করছি;
যখন ও আর সামনে নেই-
ওর প্রয়োজনটা অনুভব করছি;
যখন ও আর কাছে নেই-
ওকে কোনোদিন ভালোবাসিনি
সহজ করিনি সম্পর্কটাকে;
কিছু দেবো না বলে ভেবেছিলাম
বোঝা মনে করেছিলাম সংসারটাকে !
তোমায় ফিরিয়ে দিয়েছিলাম রিক্ত হাতে
মন গলেনি সেদিন তোমার চোখের জলের কথায়,
আজ বলছি," প্লিজ, শ্যামা ফিরে এসো,
আর একটিবার ভালোবাসো আমায়..."