তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিল সেই খাঁচাটা-
যাকে সে আঁকড়ে ধরে বসে থাকতো ঝড় উঠলে,
বারান্দার কোণে থাকা সেই খাঁচার পাখিটা
নিশ্চিন্তে ঘুমোতো তার প্রিয় বন্ধু আছে বলে।
' প্রিয় বন্ধু ' এর খেতাব দিয়েছিল খাঁচাটাকে
কেবল ভালোভাবে বেঁচে থাকার তাগিদে-
খাঁচার বুক জুড়ে সে রেখেছিল শুধু পাখিটাকে
দিন রাত সজাগ থাকতো তার রক্ষকের ভূমিকাতে।
পাখির জীবনে প্রথম প্রেম এল;
সে এখন একটু বড় হয়েছে-
পাশের গাছে সে বাসা বাঁধল
অনেকদিন হল, সে খাঁচা ত্যাগ করেছে।
এখন তার চাহিদার তালিকায়
কেবল খাদ্য আর বাসস্থান।
সমস্ত দূর্বলতাকে অতিক্রম করায়
এখন তার চোখের সামনে খোলা আসমান।
দ্বিতীয় প্রেম তাকে প্ররোচিত করে-
শূণ্য আকাশ বলে ' কাছে আয় '।
যদি পারো নিতে আকাশ করে জয়-
শ্রেষ্ঠত্বের খেতাব দিয়ে ভালোবাসব তোমায়।
এরপর সোজা উড়ান আকাশপথে-
মাঝে মাঝে রাত কাটায় মেঘেদের সাথে,
এখন বাকী আছে কেবল আকাশ ছুঁতে-
পেরিয়ে সব ক্লান্তি নীলের পথে !
কিন্তু তার আকাশ জয় করা হল না,
আকস্মিক আগত যুদ্ধে সে আহত হল।
পরাজিত পাখি ঝাপটে তার দু-ডানা
এক বাড়ীর বারান্দায় এসে দাঁড়াল।
সে বাড়ী তার অনেক কালের চেনা
বারান্দা জুড়ে তার চেনা গন্ধ,
কেবল কোনো মানুষের আনাগোনা নেই-
প্রিয় বন্ধু নেই, সব ঘরে তালা বন্ধ।
পাখি, তুমি অনেকবার প্রেমে পড়েছ ,
কিন্তু ভালোবাসো শুধু মুক্ত জীবনকে।
আজ তাহলে কেন নিজেকে বাঁধনছেঁড়া ভাবছো?
সেই জীর্ণ খাঁচাটাকে না দেখতে পেয়ে !