এমন মজার রাজ্য হেথা
যায় না কিছু বলা,
মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলে
ধরবে টিপে গলা।

রাজার কথায় শেষ কথা ভাই
শুনতে চাই না কিছু,
বাকি সবাই গণ্ডমূর্খ
করবে মাথা নীচু।

পড়াশোনার বালাই নাই
পরীক্ষা নাই কোনো,
বলতে পারলে রাজার নাম
চাকরি হবে জেনো।

একদা রাজার মনে
উঠলো নতুন সখ,
দুই চারটা দেশ ঘুরবে
কিনবে নতুন সব।
এক দেশে যাওয়ার পথে
বিধঁল পায়ে কাটা,
এখন এই অজপাড়া গাঁয়
কবিরাজ পায় কোথা?

রাজা কাকে পা দেখাবে
চুলকিয়ে যায় মাথা,
সাহস করে আগায় না কেউ
মনে সবার ব্যথা।
কাটা দিয়ে তুলে কাটা
বললো রাজার সেপাই,
এতক্ষণ চুপ ছিলি কেন?
ডাকবো নাকি কসাই।

যেই না রাজার সুচঁ ফুটেছে
নরম আলতো পায়ে ,
কেড়ে নিলো সেপাইর প্রাণ
হাতের এক ঘায়ে ।
কাটা তো তুলতে হবে
এখন কি করা,
আগে ফিরি নিজের দেশে
যদি না হই খোঁড়া।

নিজের দেশে ফিরে রাজা
ছড়ালো এক কথা,
যদি তুলতে পারো কাটা
না দিয়ে ব্যথা,
মন্ত্রীর পদ দিব
সোনার মালা গাঁথা।

এমন কথা শুনে সেথা
আসল এক ছেলে ,
চিকিৎসাটা দিল লিখে
চোখ দু-খানা মেলে ।
এক পায়ে দাড়াতে হবে
আকাশ পানে চেয়ে ,
কাটাখানা পড়ে যাবে
ত্রিশ দিন গেলে ।

কথা শুনে রাজার মনে
উঠলো ভীষণ রাগ,
নিরুপায় হয়ে তবু
বললো ডেকে বাপ-
ত্রিশ দিন অনেক সময়
করা যায় না কিছু,
আমি হলাম মহারাজ
হঠি নি কভু পিছু।

ছেলেও অনেক চালাক,
আরেক উপায় আছে ,
যান তবে বনবাসে
সোনার রাজ্য ছেড়ে ।

রাজার কাছে রাজ্য থেকে
নেই কিছু দামী,
সেই রাজ্য ছাড়তে বলে
করেছো বোকামি ।
তোমার এখন প্রাণ নেব
এটাই আমার সখ,
কাটা আমার থাকুক পায়ে
নিজের পথ মাপ।

মরতে হবে জেনেবুঝেই
এইখানেতে আসি ,
আর কত দিন বাঁচবে তুমি !
সেইটা ভেবেই হাসি ।
কাটার থেকেই ধরবে পচন
তোমার ঐ পায়ে ,
একে একে ছড়িয়ে পড়বে
কোমড় থেকে গায়ে ।
আমার মরণ সুখের মরণ
এক পলকেই শেষ,
ধুঁকে ধুঁকে মরবে তুমি
হীরক রাজার বেশ।