ঘরের মেয়ে ফিরে যাবে ,আজ দশমীর শেষ
আনন্দদের ছাপিয়ে গিয়ে ,উঠলো দুঃখের রেশ
বছর জোড়া অপেক্ষাদের, আজকে অবসান
বিসর্জনের অবসাদে ভাসলো অভিমান
মায়ের সাথে সিঁদুর খেলে ভবিষ্যতের মা
আজ কিছুতেই ঘরের মেয়ে যেতে দেবে না।
ছলছল করে মায়ের আঁখি উঠলে ওঠে জল!
কেমন করে থাকবোরে মা,বলনা উমা বল?
এসেছিলি বছর ফিরে, খুশি নিয়ে ঘরে;
মেয়ের মুখ দেখে মায়ের আনন্দ না ধরে।
গরিব বাবা স্বপ্ন বেচে কেনে মেয়ের আভূষন
মনের কোণে তবু খুশি কেবল মেয়ের আগমন,
দূর দেশেতে ছেলে থাকে আসবে পুজোয় ফিরে
তাইতো মা কষ্ট ভুলে প্রদীপ জ্বালায় নীড়ে।
যৌনপল্লীর মাটি মেশে দশভুজার ঘটে,
অস্পৃশ্যদের স্পর্শ বিনা অস্পৃশ্য মা বটে।
মেয়ের রুপের বাহার দেখে ভরে মায়ের মন,
টানা চোখের চাহনি তার আশার অনুক্ষণ।
বেদি সাজে দোকান বসে ফোটে নাড়ুর গুড়
পুবের হওয়া বয়ে আনে আগমনীর সুর।
মন কোনেতে নেশা লাগে দোলে যে কাশফুল
মা দুর্গার আগমনে প্রাণ হয় মশগুল।
কার্তিক আর গণেশ আসে লক্ষী স্বরস্বতী,
যেমনি তাদের রূপের বাহার তেমনি পরিপাটি,
অশুভের বিনাশ হেতু আসেন মর্তভূমে
কত মায়ের মেয়ে হয়ে অনুভূতির ঘুমে।
কত আলো কত আবেগ কত আজব দাবী!
গলায় হার কোমরে বিছা, নাকেতে নাকছাবি,
তবুও উমা যাবার আগে ধরে যে বায়না,
আজও তাকে মেয়ে রূপে কেউ তো চাইনা,
ছেলে রূপী অসুর হোক তাও মন্দ নয়!
উমার জন্য কেন তবে আজ,এত অভিনয়?
বলবো পরে সেসব কথা কাজের কথায় আসি
সপ্তমী যায় অষ্টমী যায় কাটে নবমী নিশি।
আজ দশমীতে কলা বউয়ের হবে বিসর্জন
ফিরে যাবে উমা ঘরে কাঁদে মায়ের মন।
ভেবে মেয়ের মুখখানি আঁতকে উঠে প্রাণ!
বছর জোড়া অপেক্ষাদের আজকে অবসান।
আবার বাঙালি দিন গুনবে এক দুই তিন চার
সময় যত কঠিনই হোক ইচ্ছা যে দুর্নিবার।
বছর ঘুরে মেয়ে আসবে ঘরের আঙিনায়!
ভাসিয়ে দিলাম সময় ঘড়ি উমার অপেক্ষায়।।