দগ্ধ, পুড়ে সেদ্ধ আমি, আমার বহিঃস্থ, আমার অন্তস্থ,
দরদর ঘাম ছুটে চলছে ভাদরের শেষ বানের মত,
ভ্রু কুঁচকে গেছে, চোখ চকচক করছে, ঠোঁট অনবরত
গেয়ে যাচ্ছে বিলাপ, করে যাচ্ছে নারকীয় শাস্তির অনুভূতি প্রকাশ, নসিকা গহ্বর সদা বিতাড়িত করছে তপ্ত, চাপা প্রশ্বাস;
তুমি কি দেখো না, শোনো না, অনুভব করো না হে সূর্য!
গাঢ় এসিড যা কেবলই ক্ষয়কারক, তীব্র জ্বালাময়ী
এবং অধিক সক্রিয়, তা দিয়ে ঝলসে দিচ্ছো কেবলই
কিছু হীন জীবন, যারা গরীব এবং অন্তত মধ্যবিত্ত।
মধ্যবিত্তের মানে কি তুমি জানো, হে সূর্য!
মধ্যবিত্ত মানে ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত অর্থাৎ উর্ধ্বমূখী চাতক,
মধ্যবিত্ত মানে বিস্তৃত মরুভূমির বুকে জন্মানো বিষন্ন ক্যাকটাস,
মধ্যবিত্ত মানে দূর্বল, অযুত পথে তাড়িত গুলিবিদ্ধ শিকার।
চির স্বচ্ছ অবয়বেই দেখতে পাচ্ছি, সর্বভুক নরকের মতোই
বিনাশী তেজো শিখায় নিঃশেষ করতে চাও অবশেষ,
ধ্বংস করতে চাও ধ্বংসাবশেষও এবং
মধ্যবিত্ত সকল প্রান্তীক জীবন, জীবনের অঙ্কুরোদগম।
তারা যারা সভ্য, আমার ধ্বংসাবশেষের উপর আধিপত্য
যাদের, যারা আমার মত তৃণ পায়ে পিষে উচ্চাসনে আসীন,
তারাই সদা নিঃসরণ করছে কার্বন, সালফার,
বিদঘুটে ধোঁয়ায় ক্ষেপিয়ে তুলছে, তোমার উজ্জ্বল হৃদয়।
তারাই আকাশ চুম্বি অট্টালিকার পর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত
কক্ষে রোমাঞ্চিত, মদের গ্লাসে এবং নারীর ঠোঁট চুম্বনে।
তাদের একটি চুলের সন্ধান তো তোমার সাধ্যে দুষ্কর!
কার হিংসায় কাকে পুড়ে ভষ্ম করছো তুমি, হে সূর্য?