আমি প্রান্তিক কৃষক এক, কেবলই ফসল চাই;
অনেকদিন ধরে দুঃখ খেয়ে বেঁচে আছি,
ক্ষুধায় সদা ক্ষয় প্রাপ্ত মোর ক্ষুদ্র ক্ষুধাতুর শরীর,
সাথে ক্ষয় প্রাপ্ত রক্ত মাংসে গড়ে উঠা মোর অহংকার।
এই যে বিলাসী গগন, তুমি ঢেকে যাও মেঘে,
ঘন ঘন গর্জনে বর্ষণ মুখর করো এ তপ্ত মহি,
আমি ধানের চিটা মাথায় নিয়ে নাচছি দেখো
বাদরের মতো করে, সাজিয়ে গুছিয়ে ব্যাঙের
বিয়েটাও সেরে নিচ্ছি মহা ধুমধামে, এবার তো এসো
তুমি বৃষ্টি, ধুয়ে দাও আমার শরীর ঘিরে থাকা
সুপ্ত দুঃখের, ব্যাপিত ক্ষুধার, মর্মান্তিক এ সিম্ফোনি।
আমি নগরের টোকাই এক, কেবলই খাদ্য চাই;
আঁধারের বক্ষ চিরে যে চাঁদ জ্যোৎস্না বিলায়,
তাকেই খাদ্য মনে হয়, মনে হয় এ তো উনুনের আগুনে
সদ্য ঝলসানো এক সভ্য রুটি।
অবশ্য এহেন মর্মান্তিক আঁধারে তার জ্যোৎস্না আমার
এমন গগন বিলাসী ঘরের একমাত্র চাঁদোয়া,
তাকে খাওয়া যাবে না, তাই তার আলোতে বেরিয়ে যাই
রাস্তায়, কাঁধে মলিন বস্তা, পরনে বস্তা ফাড়া
কুড়াতে থাকি ঠোঙ্গা, কুড়িয়ে পাই দুঃখ।
হয়তো এভাবেই একদিন দুঃখ কাঁধে নির্বিবাদে পৌঁছে যাবো
দুঃখ খেয়ে, শত মরু-অরণ্য পাড় হয়ে একদম শ্মশানচিতায়।
দুঃখ, দুর্ভিক্ষ এবং মহামারীতে আমার একমাত্র আহার্য,
একজন অভিশপ্ত, ক্ষুধার্ত এবং অনিকেত কেবল আমি,
প্রাপ্তির অপর্যাপ্ততায় মরবো বলে কি কৃষক আমি অথবা
টোকাই? আমি দুঃখ খেয়েই বেঁচে থাকবো আরো শত বছর।