বাদা বনের ছোকড়া শেয়াল
এমন বোকার হদ্দ না -
হুক্কা রবে ধরলে খেয়াল
সুর আসে তার মন্দ না ।

একটু ছিল অহং মনে
শিয়াল হলেও শিষ্ট সেই-
তাহার তুল্য বিশাল বনে
দ্বিতীয়টি ,আর যে নেই ।

সময় কাটায় সুরের নেশায়
সমাজে সে মিশতো না –
ইচ্ছে যাবে গানের পেশায়
বন্ধু মাঝে ঘেঁসতো না ।

হঠাৎ সেদিন ইচ্ছে হলো
একটু খানি সুর সাধার –
মনে আরো ইচ্ছে ছিলো
দু’চার খানি গান বাধার ।

যেইনা ভাবা খালি গলায়
উচ্চ রবে তুললো তান-
শিয়াল রাজা বললো হেলায়
' ব্যাটারে কেউ ধরে আন ।

আনার সময় আনিস বেধে
কানটি মুলতে ভুলিস না –
যতই পায়ে পড়ুক কেঁদে
হেঁচড়ে আনিস , তুলিস না ।
'
সভার শেষে - সবার শেষে
শিল্পী শিয়াল কাঠগড়ায় –
রাজা মশাই মুচকি হেসে
সুখটান দেন গড়গড়ায় ।

‘ ইচ্ছেটা কি , মতলব তোর
এবার তবে খোলসা কর –
সংক্ষেপে সার , করিসনে ভোর
মাথায় আগুন , মারব চড় ।’

ভীষণ ভয়ে জড়োসড়ো
প্রাণটি বুঝি রাখাই দায় –
সুরেতে নয় সরোগড়ো
ঘাট হয়েছে সুর সাধায় ।

‘ মাফ চাইছি রাজা মশায়
ভুল হয়েছে গান গেয়ে ’
পড়তে হলো এমন দশায় !
অশ্রু ঝরে গাল বেয়ে ।

‘ গান গেয়েছিস ?’ শুধোয় রাজা
ভীষণ ক্রোধে চিৎকারে –
‘ পেতেই হবে এবার সাজা ’
যুক্তি ওড়ান ফুৎকারে ।

‘ গানের গলা আছে দেখা
হেঁড়ে গলায় গান জমে ?
হুক্কা-হুয়া আমায় দেখা
কোথায় লেখা সরগমে ।’

রাজার আদেশ-লেজটি কেটে
দূর করে দেয় জল্লাদে –
শেয়াল সমাজ পড়লো ফেটে
আট খানা হয় আহ্লাদে ।