ঠাকুমা মানে রাজা রানী আর রূপকথার গল্প।
ঠাকুমা মানে জোলার গল্পে হাসি ফোটানো।
ঠাকুমা মানে দিনাজপুর রাজ বাড়িতে ঘটা কত না জানা কাহিনী।
ঠাকুমা মানে প্রাঞ্জলতায় পরিপুর্ণ সুরেলা কণ্ঠে রামায়ণ।
ঠাকুমা মানে কাক ডাকা ভোরে বেলি,বকুলের ঘ্রান আর খেজুরের রস।
ঠাকুমা মানে সন্ধ্যা বেলায় শংখ ধ্বনি এবং পূজার প্রসাদ।
ঠাকুমা মানে সুরেলা কণ্ঠে কমলা সুন্দরী,রহিম রূপবান এর কবি গান।
ঠাকুমা মানে টাটকা গাভীর দুধ,পায়েস, দুধ পুলি, পাটিসাপ্টা।
ঠাকুমা মানে আম্র ফল,কামরাঙ্গা, জলপাই,আর কুলের আচার এবং কাচা লংকা-লবণ যোগে ঘাম ঝড়ানো চাটনি খাওয়া প্রতিযোগিতা।
ঠাকুমা মানে দিনে ৩ বার চায়ের আড্ডা।
ঠাকুমা মানে উষ্ণ শাসন।
ঠাকুমা মানে গীতার শ্লোকের সঠিক উচ্চারণ।
ঠাকুমা মানে বড় মাছের মাথার মুড়ি ঘন্টো।
ঠাকুমা মানে কাঁচামরিচ দিয়ে কচি খাসির ভুনা।
ঠাকুমা মানে ২৭ মাঘে মাসকলাই ডাল,পাতাকপির ঘন্টো,ছোট আলু ভাজা,ফুলকপির বড়া,মুগ ডালের পাপড় ভাজা,বেগুনের চপ সহ তৈরী রাজভোগ।
ঠাকুমা মানে নিত্য নতুন রান্নার প্রশিক্ষণ।
ঠাকুমা মানে কবিতার আসর।
ঠাকুমা মানে জীবনে নিজের পায়ে একলা পথ চলা।
ঠাকুমা মানে দুপুর বেলা সরিষার তেল গায়ে মেখে কনকনে ঠাণ্ডা জলে গা ঘষে ঘষে স্নান ।
ঠাকুমা মানে শৃঙ্খলিত জীবন।
ঠাকুমা মানে উচ্চস্বপ্নাভীলাস।
ঠাকুমা মানে পরিবার স্বজনপ্রীতি আর একাত্মতা।
ঠাকুমা মানে বাবার হাতে মার খেয়ে আশ্রয় নেয়া এক নরম কোল।
ঠাকুমা মানে শুভ কাজ করার আগে দক্ষিণ হস্তের আশীর্বাদ।
ঠাকুমা মানে অনন্ত প্রশ্রয় আর সীমাহীন ভালবাসা।
ঠাকুমা মানে বৃক্ষরোপন আর বাড়ির গাছের আম দুধে আর কাঁঠাল মুড়িতে পেট ভড়ানো।
ঠাকুমা মানে নিজ বৃক্ষের ডাবের জলে পিপাসা মেটানো এবং মা দুর্গা ও মা লক্ষ্মী পূজায় নাড়ু খাওয়া।
ঠাকুমা মানে এক জ্ঞান বৃক্ষ।
ঠাকুমা আজ আর নেই-
হৃদয়ের মণিকোঠায় থাকবে ঠাকুমা আজীবন।
চিরকৃতজ্ঞ আমি যে গড়েছে আমার শৈশব কৈশর,যৌবন।
আজো সেই স্পর্শ অনুভব করি আমি।
শুনতে পাই ঠাকুমার কণ্ঠধ্বনি।
দেখতে পাই তার হাসিমাখা বদন আর সুকেশ।
তার সুবাসিত কেশশৃংগার প্রসাধনীর গন্ধ ভুলিনি এখনো।
সেই ছেলে বেলায় তার হাতের দুধসাগুর স্বাদ ভুলবোনা কখনো।
ঠাকুমা থাকবে আমার সাথে জন্মজন্মান্তর ধরে।
নিঃশ্বাসে, প্রশ্বাসে, বিশ্বাসে মম হৃদয় গভীরে।