দেখা মিলেছে আজ একজনার।
অঞ্জু যে নাম তার ।
পঙ্গু বাবা গৃহে একেলা ।
উদাস মনে সে ছিল চঞ্চলিত বিকেল বেলা।
পথে ছিলাম আমিও একা ।
ক্ষুধার্থ নয়নে সে বলে; "মাত্র দুইশত টাকা” ।
চমকে উঠে আমি বলি তারে !
কি বোঝাতে চাইছ তুমি মোরে ।
"মাত্র দুইশতই তো চেয়েছি, বেশিতো বলিনি!"
"অন্যসময় প্রেমিকার লাগি
দুইহাজার খরচ করো আমি জানি ।"
বাজে বকোনা; প্রেমিকা নেই মোর কোন।
মাস শেষে দুইশত টাকা থাকেনা,কথাটা কি তুমি জানো?
আমি কেনোই বা দিব,তোমায় দুইশত টাকা ?
সবই আছে তোমার , খেটে উপার্জন করো টাকা।
বেশি কথা বলিস তুই,চল ঐ ঝোপের আড়ালে।
লুটেপুটে খেয়ে নে মোরে,কাকপক্ষীর অন্তরালে ।
বিনিময়ে তুই দে মাত্র দুইশত টাকা মোরে ।
ঋণী হয়ে থাকব একথা জানাই তোরে ।
লজ্জা করেনা তোমার মাত্র দুইশত টাকায়
বিক্রি করছ নিজ লাবণ্যিত দেহ ।
ত্যাগ করে লজ্জার ভুষণ
সমাজকে করছ কলুষিত ।
বজ্রকণ্ঠে অঞ্জু আমায় বলে-
"কলুষিত করেছিস তোরা রাক্ষস ছেলে !"
বিয়ে করা বধূকেও ছাড় দিসনি ।
পতি হত্যা করে নিয়েছিস মজা, কিছু বলিনি।
হ্যাঁরে; তোর গলায় তো দেখছি তুলসির মালা ।
গীতায় যে লিখা আছে বধূ অপহরণ তো মৃত্যুমালা ।
তবে কেন পেলামনা আমি ন্যায় বিচার ।
ঘরে পঙ্গু বাবা, করছি বেশ্যাচার ।
তোর মত অনেকের সাথে শুয়েছি ।
বলে রাতে সখি, দিনে ছিঁ ছিঁ !
তোরা পুরুষরা এক একটা শুয়োরের বাচ্চা।
ঘরে ঘি মাখন ছেড়ে খেতে আসিস বাসিপঁচা ।
তোদের স্বভাব কোনদিন পালটাবেনা ।
আর আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে লাঞ্চনা ।
আমি বলি তারে শান্ত হও সখি ,
নিজেকে বদলাও, দেখবে জগত সুখি ।
ফিরে আস মোর সমাজে, ঐ অমানিশা ছেড়ে।
অতীতের সমস্ত জ্বালা বাক্সবন্দী করে ।
নতুন করে জীবন করো শুরু ।
জাগিয়ে তোল তোমার এই মলিন তরু ।
অঞ্জু আবার ভারাক্রান্ত হ্রদয়ে বলে-
" তোমরা শিয়াল সম আমাদের সমাজ বলে ।"
আমরা যতই ভাল হয়ে যাই তোমাদের সেটা সইবেনা ।
সুদৃষ্টিতে তোমার ভদ্রলোকেরা কোনদিন তাকাবেনা ।
আমি তোমার সমাজে যাব কি পরিচয়ে?
বেশ্যা আমি, গ্রহণ করবে কে আমারে ?
তুমি কি আমায় পারবে বিয়ে করতে ?
সমাজে আমায় বধূর স্বিকৃতী দিতে ?
নষ্ট আমি অঞ্জু বলছি আজ –
হয়ে যাব ভাল।
ফিরে যাব তোমার সপ্নীল পৃথিবীতে-
'ভালবাসি তোমায়' একবার যদি বলো ।
তার এই আক্ষেপ আমার হ্রদয়কে করে তোলে দুর্বল ।
আর অঝোর ধারায় দু'চোখ বেয়ে পড়তে থাকে মম অশ্রুজল।