মাকে আমার খুব মনে পড়ে— যে একদিন
স্বাধীনতার মানচিত্র এঁকেছিল বুকে, অথচ সেও কিনা
স্বাধীনতা খোঁজেই পায়নি জীবনে। মেকি অশ্রু ঝরায়ে নয়নে,
অন্তরে পরশ্রীকাতর ফসলের জুম— আমরাই
চাষ করেছি। আজো ধর্ষণের কালো চাঁদের জোছনায়
আমরাই বুনছি নষ্ট ফসল, কতো নগ্ন শরীর, কতো গুমোট
আবদ্ধ মারুতহীনা জীবন। ভাই আমার, এসো ফিরে সঠিক
মায়ের অঙ্কে, মুছে যাও জননীর আঁখি—লোর;
সুদূরপ্রসারী নীলাভ পানের জুম, সবুজ চায়ের দেশ হাতে নিয়ে
মা এখনো বসে আছে মাধবকুণ্ডে—
ফিরলেই তোমাকে অবগাহন করাবে মাতৃপ্রেমে, স্বদেশপ্রেমে।

ডাঙ্গুলি, বৌচি, কানামাছি খেলা কেড়েছিল
যে সময়, হায়! সে—সময় আজ মানব-পাচারের খেলা
খেলে চলেছি মাংসাশী হিংস্র নোখে; দুটো চোখে—
হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার অনল রচি, নিজেরাই নিজেদের পাপের শেকলে
বেঁধেছি মাকড়সার জালের মতো এলোমেলো; আমাদের মুক্তি—পাখি
আজ সেই এলোমেলো জালেই বাঁধা; আকাশেও ঘুরে থাকা, বিস্তর আঁকা
রাজাকারের ছায়া—ডানা—শকুন। ভাই আমার, এসো ফিরে সঠিক
মায়ের অঙ্কে, মুছে যাও জননীর আঁখি—লোর;
সমস্ত তটিনীর নীর, ধানের বিস্তৃত সোনালি গন্ধ আঁচলে নিয়ে
মা এখনো বসে আছে পদ্মার পাড়ে—
ফিরলেই তোমাকে অবগাহন করাবে মাতৃপ্রেমে, স্বদেশপ্রেমে।

এত্তো সব— তবু নেই রব! চুপচাপ
জীর্ণ গ্লানির দকমান্দা পরে কেমন করে আছো? সেই ছোটোবেলা—
স্নানে নামতে না গেলে জোর করে নাইয়ে দিতে অস্থির খেলা
ভেঙে দিয়ে। আজ এই খেলা ভাঙো, দাও দীক্ষিত স্নান;
মোদের দুর্নীতি—পাপ—কলহ হতে মুক্ত করো আর
বিশাল শূন্য গগনের মতো নিজেকেও স্বাধীন করো।

১৭/০৭/২০
হালুয়াঘাট