যদি রজনী কাটিবে জাগিয়া এসো, ওগো, এসো মোর
শয়নতলে।
সমস্ত পৃথ্বী স্তব্ধ ক্ষণিকে আধার বদ্ধ
রাখিব নয়ন কোমলে।
আসিছে বর্ষা গাঢ়তম, নিবিড়কুন্তলসম
ভেসে যাবে সাগরের কোলে।
ওই- যে আগত আধার----- রাত্রি করিবে পার,
কুলুকুলু কলভাষে কত-কি ছলে।
যদি রজনী কাটিবে জাগিয়া এসো ওগো, এসো মোর
শয়নতলে।।
যদি আধার তোমার প্রিয়ে কেমনে থাকিবে চেয়ে
এ নিশিতে-----
হেথা শিশির পড়িছে আজ প্রভাতে পুষ্পের সাজ,
দিবালোকের আলো যেন জ্বলিছে শশীতে।
দুটি কালো আখি দিয়া দেখে জুড়াইবে হিয়া
বারির ঝিলমিল সেই রশ্মীতে,
হঠাৎ কুঞ্জবনে কি জানি পরিবে মনে
তৃণাসনে কিছুক্ষণ বসিতে।
যদি আধার তোমার প্রিয়ে কেমনে থাকিবে চেয়ে
এ নিশিতে ।।
যদি মরণ লভিতে চাও এসো, নেমে হেথা
আধারি ভুবনে।
থাকিবেনা কোনো কাজ, চিন্তাহীন প্রাণ আজ,
জাগিবে সুন্দর মম এ মনে।
ঢেকে যাবে সব লাজ করিবে অপরুপ সাজ
স্বপ্ন ভাসিবে এ দুটি নয়নে,
ঘুরি ফিরি চারি পাশে নাহি যদি প্রাণহাসে
যামিনী কাটিবে বিরহশয়নে।
যদি মরণ লভিতে চাও এসো নেমে হেথা
আধারি ভুবনে ।।
যদি কখনো ফুড়োয় নিঃশ্বাস ভাঙ্গিবে অনন্ত বিশ্বাস
কাটিবে তখন রজনী।
রাত্রি হবে দিনমান------ আদি অন্ত পরিমাণ,
কাঁদিবে স্বজন-স্বজনী।
যাবে সবে ভুলে, নিখিল বন্ধন খুলে
ভুলিবেনা মাতৃজননী।
হইবে শান্ত, সুগভীর, থাকিবেনা চিন্তার শির
মৃত্যুসম নীল স্থীর ধরনী।
যদি কখনো ফুড়োয় নিঃশ্বাস ভাঙ্গিবে অনন্ত বিশ্বাস
কাটিবে তখন রজনী ।।