হে সুন্দরী বসুমতী তুমি মোরে করেছো মহান
গড়িয়াছো মোর দেহখানি তুমি জীবন করেছো দান।
এই যে হেথায় বসিয়া অবরালে,
দেখিয়াছি তোমায় কত- কী ছলে
জীবন খানি দিয়েছো তব-মম-কত উল্লাসে
হেরিনু তোমায় বাকল ছাড়ি নির্লিপ্ত উদ্ভাসে।
নিশি না পোহাইতর জাগিয়া দেখিনু হইয়াছে বিদায় বেলা
সকলে তুমি লালন কর, কেন তোমাতেই অবহেলা
তুমি তো সুন্দরী বসুমতি,
তোমারি মাঝে করিয়াছো মোরে অধিপতি
হইবে তুমি রাঙা পথে মোর অস্পরা সুন্দরি রানী
তোমাতেই মিশিয়া থাকি যেন আমি তুমিই মোর কন্ঠবাণী।
যদি ছাড়িবে মোরে অভিমানী করে দিবসের বিদায় বেলায়,
তবে শুন কথা, এ বিরহিনী ব্যাথা, জাগিয়া ওঠে তোমারি হেলায়।
কুলে কুলে ডাকব আমি যদি না দেও সাড়া,
পাগলিনী হইয়া খুজিব তোমায় স্বর্গ-মর্ত-ধরা
চোখের জলে ভাসিয়া-ভাসাবো এ অশ্রান্ত অশ্রু বারী
কেমনে ভুলিব তোমায়, তুমি যে মোর অর্ধাঙ্গিনী নারী।
চাহিয়া দেখিনু তোমায় আজি কেন নিরশ্রু নিষ্ঠুর
বুকে চেপে কাদি আমি, কোথায় তুমি কত দুর।
কেন আস না তুমি আর গলা জড়াইয়া,
হুহু করে ওঠে বুক কাদে আমার হিয়া
তুমি ছাড়া যাবন-যৌবন মোরে গেথেছে ব্যাথার-বিধুর,
চোখে ভরা জল বুক ভরা কথা কন্ঠে আসে না সুর।
তোমারী মাঝে শত জনমের শত শত জলধি বহে
বারে-বারে ডুবি আমি বারে-বারে উঠি জন্ম-মৃতু-দহে।
কত কি জীবের কত নদনদী বাও,
কখনো কভু কারো কাছে কিছু নাহি চাও
পাষান হৃদয় লয়ে কেমনে থাকি তোমারে ভূলি ?
এ জীবন আমি তোমারে দিলাম সপে নিখিল বন্ধন খুলি।
মনে পরে যায় অভিশাপ বানী তুমি যাবে সবে ভুলে
তবে কেন হায়? দিয়েছিলে মোরে রুদ্ধ দুয়ার ঘা দিয়ে খুলে।
কেন বেধেছিলে তুমি ছোট্ট খেলা ঘর,
আজি কি হলো,আমায় করলে পর
জেগে আছি একা-- তুমি ঘুমায়েছ বেভূল আপন সুখে
তোমারি আশায় কাঁদিয়াছি বসে, সেই আপন মনোদুখে।
আর কী! আসিবেনা তবে,এজীবনে গেলে ছাড়ি,
তোমায় বিনে জীবন-যৌবন মোর নিঃস্ব ঘরবাড়ি।
নতুন নিয়ে খেলবে কি তুমি? এ অবলীলায়!
নানান রঙের আভাস ছড়িয়ে লুটিয়ে পড়বে ধুলায়
তবে ব্যার্থ কি মোর জগৎ লীলা এ জনমে?
তোমায় ছাড়া এ জীবন যেন জীবন আর নহে।।