আমার মা’ আমার বাংলা ভাষা
          --------------ইফতেখার হোসেন

যেদিন প্রথম মা বলেছিলুম
জানিনা সেদিন কতো
সুন্দর করে বলে ছিলুম,
আর কিভাবেই বা বলেছিলুম
তবে সত্যিই মা বলে ছিলুম
কেননা সেদিন নিতান্তই
তোমার ভাষাতেই বলেছিলুম
না! সেদিন আর কোনো উপায়ও ছিলনা
তুমিই সম্বল ছিলে
তাইতো মা’ বলতে পেরেছিলুম
তোমাকে সম্বল করে এক-পা দু-পা করে
এগতে এগতে অনেক দূর চলে এসেছি
তুমি সত্যিই ঝাপসা হয়ে যাচ্ছ!
নিজের তাগিদে তোমাকে
এলোমেলো করে দিয়েছি
প্রয়োজন অপেক্ষা মর্যাদা গড়তে
তোমাকে পেছনের সারিতে
দাঁড় করিয়ে রেখেছি ।
কেন যেন মনে হয় ---
তুমি পক্ত নও;স্বয়ংসিদ্ধও নও
তাই তোমাকে দিন দিন
ভুলে যাচ্ছি ---!
এইভাবে প্রতিটি বিনিদ্র রাত
তোমাকে অবজ্ঞা করে চলেছি
তারপরও তুমি রাগ করনি;
আভিমানও করনি ।
বরঞ্চ মনে করিয়ে দিয়েছো –
তোমার বুকে জমে থাকা
তাজা রক্তাক্ত ইতিহাসের কথা!
আমার ভাইয়েদের কথা
যারা আজও অমর !
আর আমি অবিশ্বাসির মতো এখনো
আত্মমর্যাদা নিয়ে ব্যস্ত !
বড্ডো বেইমান হয়ে যাচ্ছি ।
আসলে আমি তোমাকে
উপলব্ধিই করতে পারিনি
তোমার সন্তান গুলোর ইতিহাস
আমি ভুলে গেছি ।
অথবা ছুঁয়েই দেখিনি কোনোদিন
আমি এখনো মনে করি তুমি সংকীর্ণ
সীমাবদ্ধতার আচ্ছাদনে তুমি সীমাবদ্ধ
আর! আমিতো-- জানিই না --
তোমার দৌলতে ---
আমার মতো কতো অধম
তার মা’কে স্মরণ করতে পারে।
পৃথিবীর ভষাগুলো এক হয়ে
সাব্বাসি দেয় তোমাকে
‘’অমর একুশের” দিনে
বড্ডো বেহায়া হয়ে যাচ্ছি দিন দিন
আসলে আমারই ঝুলিটা বড্ডো ছোটো !
তোমার ভাষাতেই স্বপ্ন দেখি
তোমার ভষাতেই কষ্ট পাই
অথচ পার্থিব্য চাওয়ার কাছে
সবকিছু বিক্রি করে দিয়েছি।
এমনকি ! তোমাকেও!
      কিন্তু !
যেদিন সন্ধ্যা নামবে!
ফুল শুকাবে
অন্ধকারে পা জড়াবে ;
একটি ভোর দেখার জন্য--
এবুক ধড়ফর করবে
খাঁখাঁ করবে এ হৃদয় !
তৃষ্ণার্ত বুক যখন –
মায়ের কোল খুঁজবে !
হা-হা কার করবে
যখন এই বসুন্ধরা
পৃথিবীর সকল ভষাগুলো যখন –
নেপথ্যে থেকে আমাকে
তিরষ্কার করবে --;
যখন আমার আর
কিছুই করার থাকবেনা
তখনো তুমি পথ চেয়ে থাকবে –
একবার মা’ ডাক শোনার জন্য !
রফিক-সালাম-বরকত-জব্বার-সফিউল
আমার ভাই !
আমাকে ক্ষমা করো !
আমি মা’ ডাকতে ভুলে গেছি ।
               ঃ-------ঃ