ধিক্কার
ইফতেখার হোসেন
তোমরা যখন বড়ো বড়ো বিষয় নিয়ে ভাবছিলে
সেগুলি নিয়ে লেখালেখি করছিলে
দেশ থেকে দেশান্তর বিশ্বের সমস্ত ঘটনা গুলো
যখন তোমাদের মাথায় কিলবিল করছিলো
আর সেগুলোকেই হাইলাইট করছিলে
আমরা তখন মাঝ মাঠে গান গেয়ে
কলমির শাক তুলে বেড়াচ্ছিলাম
আর তোমাদের বিদ্রুপ করছিলাম
তোমরা যেভাবে সন্ধ্যা লাগার কথা বলো
ঝাপটাটি লাগানোর সাথে সেটার কোনো মিল নেই।
আমার মায়ের কোলে রোজ সন্ধ্যা নেমে আসে
বাঁশের পাতা ধানের তুস আর ঘুঁটের দগদগে আগুনে
এখনো আমাদের চুলাহ্ গুলো জ্বলে ওঠে
জ্বলে ওঠে আমাদের বুকগুলোও ।
আমরা এখনো ‘মায়া’ আর ‘প্রেমের’
পার্থক্য দেখাতে পারি অনায়াসে
ভালোবাসার দোহায় আমরা এখনো দিতে শিখিনি
আমরা অতি নগণ্য নগ্ন -------
তোমাদের বড়ো বড়ো ভাবনাগুলির ধার ধারিনা ;
আমাদের যে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোই’
আমরা যে অসহায় ভাই !
আমাদের জন্য তোমাদের কী
কলম ধরার সময় আছে !
মৃত্যু
ইফতেখার হোসেন
সেদিন যখন সত্যিই তোমার দোড়-গোড়ার সামনে চলে আসব
তখন তুমি আর ঝাপসা থাকবেনা
স্পষ্ট হয়ে যাবে তোমার দৃশ্যপটগুলি
যতনে যে সমস্ত লালনাগুলোকে জুগিয়ে রেখেছিলাম
সব এক এক করে খান খান হয়ে যাবে
বুকের ভাষাগুলো তখন ধিরে ধিরে স্তব্ধ হয়ে যাবে
স্মৃতির উন্মাদনায় ভাসমান ছবিগুলো
সব এক এক করে নিস্তেজ হয়ে যাবে
নিস্তেজ হয়ে যাবে এই শরীর তোমার আগমনে
বড়োই কঠোর তোমার এই আগমন বার্তা
নির্দয় নিষ্ঠুর পাষাণ
সময় অসময় সুখদুঃখ কষ্ট কিছুই বোঝেনা
কিন্তু তোমার বার্তার চেয়েও শক্ত কঠোর এ মন
তুমি আসন্ন জেনেও দিব্বি শরবত গিলছি
দিব্বি হাত পা চালিয়ে ইসারা করছি
কিন্তু কতক্ষণ !
তুমিও অবলিলাক্রমে লিলা দেখে যাচ্ছো
হাসছো বদনাম রটাচ্ছো !
এইভাবে কালের পর কাল তুমি কথা রেখেছ
একবারও খিলাফ করনি
তারপরও আমরা তোমাকে জয় করি
কেননা আমরা জানি তুমি অবশ্যই আসবে
তাণ্ডব চালাবে
এই অবসন্ন নিস্তেজ শরীরের কতই বা ক্ষমতা ।
তোমাকে ধরে রাখবে
কিন্তু তারপরও ভোর হবে !
সকাল গড়াবে !
রক্তের ঘামে শরীর ভিজে যাবে
তুমি কাছে থেকেও ছুঁতে ভয় করবে
তাজা রক্তগুলো এইভাবেই তুমি চুষে নেবে
ভিড়ের মাঝখান থেকে
তাদেরই তৈরি যাঁতাকল দিয়ে।
আর ওরা এত কাছ থেকে
তোমাকে দেখার পরও বুঝতে পারবেনা
তুমি এসেছিলে ।
তুমি আসন্নই থেকে যাবে !
অথচ তুমি এসেছিলে ।
--------------ঃ ঃ------------