ক্ষুদ্রের বর্ণন
                             ……… ইফতেখার হোসেন

আমি ক্ষুদ্র!
বৃহৎ পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র শিশির বিন্দু ।
আমি পাগল !
সহজেই সত্য কথা বলে দিই
মার খাওয়ার তোয়াক্কা আমি করি না ।
আমি অসহায়
তোমাদের তরে আমি বাঁচতে চাই
আমি গরিব ঠিক-ই
কিন্তু আমার অপমান বোধ আছে ।
আমি নিপীড়িত আমি বঞ্চিত
আমি বাঁচতে চাই !
আমি অতিলোভী
তোমাদের স্নেহ জবরদস্তি ছিনিয়ে নি-ই ।
আমি অত্যন্ত অকর্মণ্য
জগতে আমার কোনো প্রয়োজন নেই ।
আমি হিংসুটে
তোমাদের বিলাসিতায় দুঃখ পাই
আমি খ্যাপা-বাশু
তোমাদের খেপিয়ে তুলি ।
আমি পরাজয়ী
সামাল দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই ।
আমি ভিক্ষুক ;
তোমাদের দরজায় টোকা দিই
আমি উল্টোরথের যাত্রী
স্রোতের প্রতিকূলে পাড়ি দেওয়া আমার স্বভাব ।
আমি নির্বোধ
আমি অতি সহজে বিশ্বাস করি ।
আমি নির্দয়, আমি পাষাণ
আমি কাউকে করিনা ক্ষমা
নির্ঘাত বেহায়া আমি
বার-বার তোমাদের দুয়ারে যাই।
আমি অশান্ত  কালবৈশাখী ;
সময়ে ছিঁড়ে ফেলি তোমাদের মায়াজাল ।
আমি বাঁটুল ;
যারে ছেড়ে দিই তাকে -;
ধরে রাখার ক্ষমতা আমার নেই
ক্রমশ আমি আমার গুলির বেগ জোরালো করি ।
আমি অত্যন্ত বদমাইশ
তোমাদের গোপন তথ্য ফাঁস করে দিই ।
আমি হীনবল
পাল্লা দেওয়ার শক্তি আমার নেই ।
আমি অর্থহীন
আমি মধু পিপাসু আমি নই।
আমি বাক্যালাপে মনের ক্ষিদে মেটাই ।
আমি অপারগ
তোমাদের অন্যায় সহ্য করি
আমি স্বপ্নচারী স্বপ্নলোকের দূর সমুদ্রে পাড়ি দিতে ভালোবাসি ।
আমি দিবা স্বপ্ন দেখি; আর
আস্তাকুড়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য খুঁজে বেড়াই
আমি নির্জন মাঠে গান গেয়ে যাই----
রাখাল বালকের সাথে ।
আমি যাদের ভালোবাসা পাই
তাদের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দি-ই ।
আমি  খ্যাপা হয়ে যাই
তোমাদের টানাহেঁচড়া কর্ম দেখে ।
আমি অতি-সামান্য ক্ষুদ্র অঙ্কুর
আমার প্রতিভা থাকতে পারে না ।
আমি সস্তা পুঁটিমাছ !
আমারে ভক্ষণ করা চলে না; কারণ ---
আমি তোমাদের থালার যোগ্যই নই ।
আমি পেটুক দ্বারে দ্বারে খাবারের খোঁজ করি ।
আমি অত্যন্ত বেমানান
আমাকে ছুঁড়ে ফেলেও দিতে পারো ।
আমি অশিক্ষিত; কথা বলার ঢং আমার নেই ।
আমি নিষ্ঠুর;ভালোবাসার অর্থ আমি জানি না ।
আমি পাঁজি ,--
তোমাদের আমি অসম্মানও করে থাকি ।
আমি অনুপযোগী !
আমাকে চেষ্টা করতে দাও
আমি ক্ষুদ্র;
তোমরা আমাকে ছায়া দাও ।


এই কবিতাটি আক্ষেপ বিষয়ক এবং সম্পুর্ণরূপে ব্যক্তিগত । আপনারা বেশিবেশি করে  মন্তব্য করুন ,যাতে আমার লেখনি আরো বেশি প্রখর হয় । মন্তব্যের আশায় থাকলাম । কেমন!