লিখেছি যাকে নিয়ে এই বর্ণিল পদ্য
সে ছিল জেলে, সুরা-মদে চূর মত্ত
চকচকে চাকু চমকাচ্ছিল তার হাতে
বুকে বসাবে, জীবন-মরণ কিঞ্চিৎ তফাতে
সাথীরা কোনোমতে বাঁচিয়েছিল তাকে
আজ তাই এ গল্প লিখতে হচ্ছে আমাকে

শাস্ত্রশাসন, যাজক-বিরোধে তোমার ছিলনা ভীতি।
মৌলশাসন, বিজ্ঞ-নিরোধে কুৎসিত রাজনীতি।
সমীকরণে সখ্য তোমার, গণিত বাল্য-মিতা,
যাজককূলের শঠতায় তুমি হারিয়েছিলে পিতা।
কেউ কথা বোঝেনি তোমার, ডাস্টার মারলে ছুঁড়ে।
থিসিস তোমার গায়েব হয়েছে, লাপাত্তা উড়ে উড়ে।
সব চোখের আড়ালে থেকেছে তোমার আবিষ্কার।
সত্যসাধনে, তপ্ত প্রতিবাদে হয়েছ বহিষ্কার।
মাতাল তুমি, খাপছাড়া জীবন, হারিয়েছিল ছন্দ,
ফ্রান্সের সম্রাট- "কাপুরুষ" বলে করেছিলে গালমন্দ।
প্লেগের কবলে কয়েদি তুমি পেয়ে গিয়েছিলে ছাড়া।
শহরের পথে ক্ষিপ্ত তুমি, ঠাইহীন, বেপরোয়া।
কৈশোরে তুমি স্বপ্ন দেখেছ, সে স্বপ্ন গণিত জানার।
আজ তোমার ঠাই নেই, গ্যালোয়া। তুমি কার? কে তোমার?

দুশো বছর গত হয়েছে, আজও তাই মনে হয়।
হে গুণী! ভুল করেছ, রাজনীতি তোমার কাজ নয়।
কী যে পরিহাস, ছন্দহীন গ্যালোয়া খুঁজে পেল তার আশা।
আজ জানি, সে মাতাল গ্যালোয়া কেন পেয়েছিল ভালোবাসা।
আমি বুঝিনা, সত্য কতটা; কতটা বা প্রচারণা।
আজ জানিনা, সে বন্ধন, প্রেম? নাকি প্রতারণা?
শেষ রাত্রি, জীবন তো শেষ। গ্যালোয়া লিখে চলে -
"স্টেফানি ফেলিসি", "নেই, সময় নেই", "আজ শেষ রাত বলে!"
পদ্য লিখতে জানি না। জানি না সে রাতে ছিল কিনা চাঁদ, তারা,
জানি না সে রাতে কীসেই বা ব্যস্ত ছিল এই নির্বাক ধরা।

এলো পরদিন, গ্যালোয়া আজ পিস্তলের মুখোমুখি
২০ বছর জীবন, তারই কী নিষ্ঠুর এক ইতি!

(ফরাসি গণিতবিদ এভারিস্ত গ্যালোয়া স্মরণে।)