আমি মুক্তিসেনা
এ দেশের তরে অস্ত্র হাতে নিয়ে
প্রতিবাদে ক্ষিপ্ত; যুদ্ধ করেছি।
পরাধীনতার গ্লানি মুছে দিয়ে
স্বাধীন পতাকা এনে দিয়েছি।
এই ভূ-খণ্ডের নামটা পাল্টিয়ে
নতুন একটা নাম দিয়েছি-
বাংলাদেশ।
কিন্তু বিনিময়ে আমি কী পেয়েছি?
অবহেলা আর অসম্মানটুকু।
সরকারি খাতায় নাম হারিয়েছি,
না পাচ্ছি সরকারি সুবিধাটুকু।
এ দেশে আরও অনেকেই আছে,
যারা মুক্তিসেনা আমার মতো।
স্বীকৃতি তাদের নেই যে কোথাও,
সুবিধা বঞ্চিত, লাঞ্ছনাহত!
তুমি বীরঙ্গনা
এ দেশের তরে তুমিও দিয়েছো-
তোমার সতীত্ব ওদের হাতে।
কলঙ্কের কালি বদনে মেখেছো,
ছিলে তবু ঐ রণ ভূমিতে।
নিজের জন্যতো ভাবোনি কখনো,
স্বাধীন করতে এ সোনার দেশ
বাংলাদেশ।
কিন্তু বিনিময়ে তুমি কী পেয়েছ?
অবহেলা আর লাঞ্ছনা ছাড়া।
এ দেশের জন্য সব হারিয়েছো,
হয়ে গেছো যেন মুকুল ঝরা!
এদেশে আরও অনেকেই আছে
যারা বীরঙ্গনা তোমার মতো।
স্মরণ করে না কেউ শ্রদ্ধাভরে,
সুবিধা বঞ্চিত, অবহেলিত।
এই হলো দেশ!
স্বাধীন অথচ স্বাধীনতা যেন
বিশ্রী ইতিহাসে নীলচে রঙিন।
মৃতপ্রায় নীতি; দুর্নীতির দ্বার
উন্মোচিত হচ্ছে প্রত্যেক দিন।
মুক্তিযোদ্ধা নয়, বীরঙ্গনা নয়
রাজাকার পাচ্ছে সার্টিফিকেট!
কর্মকর্তাগণ সরকারি খাতায়
নাম লিখতে চায় ভর্তি পকেট।
তালিকা বিহীন এক মুক্তিসেনা
সনদের জন্য নিত্য দৌড়ায়।
এ অফিস থেকে ও অফিস ঘুরে,
ছেলের চাকরির বয়স ফুরায়।
বীরঙ্গনা নারী সারাদিন ঘুরে,
সরকারি ভাতার পায়না নাগাল।
চিকিৎসা অভাবে অবশেষে মরে,
এ যেন জীবনে মৃত্যু অকাল।
________________________
অক্ষরবৃত্ত(চৌপদী লঘু পয়ার)
৩০জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ