দেয়ালে ঝুলছে সাদাকালো ছবিটা,
খুব চকচকে একটা ফ্রেমে বাঁধা ছিলো,
এখনো বাঁধাই আছে।
কিন্তু কাঠেদের তহবিল থেকে নষ্ট কাঠ-পোকারা
ছিড়ে-ফিরে খেয়েছে ফ্রেমের কিছু অংশ।

ঐ সাদাকালো ছবিটা আমার বাবার,
ওটা দেখে দেখেই বহু বছর হয়েছে পার।
হতবাগী আমার মা,
জীবনের অর্ধেকেরও বেশী সময়
অশ্রুতেই খেলা হয়েছে তার।
পাষন্ড কাঠ-পোকারাও সাক্ষি বিশেষ,
পুরোনো দেয়াল সহ,
এ ঘরের প্রত্যেকটি আসবাব
স্বভাবে অথবা অভ্যাসে,
সময়ে অসময়ে কেঁদেছে,
মায়ের কান্নায় আমরাও কেঁদেছি, বহুবার কেঁদেছি।

বাবা যেদিন,
আমাদের যোগফল থেকে বিয়োগের হিসেব কষলেন,
সেদিন ছিলো বৃষ্টির দিন!
ও বাবা, বৃষ্টি এলেই তোমায় মনে পড়ে,
অতৃপ্ত স্নানে, আমি সুখের প্রভাত খুঁজি।
চলে যাওয়াই যদি চিরায়ত আইন হয়,
তবে ডুবে যাওয়া চাঁদের অনন্ত ডুব কেনো নেই?
বিবেকের ডাস্টবিনে, ময়লা সুখ ফেলতে মন না-চায়,
এক বিধবার শোকে পুত্র কেনো মূর্ছা না যায়!
নষ্টের নগরীতে বহু আগেই দলিল চাইতাম,
স্মৃতির নির্যাতন পরিপক্ক বেহায়া,
ওদের অস্পষ্ট বকুনি, আর দাগহীন বেত্রাঘাত,
আঘাতে আঘাতে,
চূর্ণ থেকে বিচূর্ণ করেছে আমার মস্তিষ্ক!
আমি আর পারছি না বাবা!
এই দহনী দায়ভার এত বেশী কেনো ভারী?
এ ভার, ভালো লাগে না আর।

বাবা, আমার এই ছোটখাটো অভিমান গুলো
তেমায় কষ্ট দেয় নাতো, না?
বাবা, ঐ অচেনার শহরে তুমি ভালো থেকো,
দেখো, আমি একদিন ঠিকঠিক পথ চিনে,
তোমায় দেখা দেব, তুমি ভেবো না বাবা,
আমি একাই পথ চিনে নেব।