তোমরা যারে ভালোবাসা বল আমি তারে বলি প্রতারণা,
ভালোবাসার মর্ম তো সে’ই জানে, সয়েছে যে প্রসবের যন্ত্রণা।
ভালোবাসা জপে-জপে সবে মুখে তুলেছ ফেনা,
ভালোবাসা কাকে বলে! তবু হয়নি আদৌ চেনা।
ভালোবাসাকে তোমরা যদি কেউ চিনতে চাও,
মায়ের দুয়ার খোলা আছে যাও তড়িৎ চলে যাও।

হৃদয় বিলে কত ভালোবাসার অবাধ বন্যা বয়ে যায়,
গ্রীষ্মের খরা এলে সে বন্যা তো নির্ঘাত শুকায়।
জোয়ার ক্ষণে শৈলদা খালও পূর্ণ নদের দাবিদার,
ভাটার টান নিঃস্ব করে তার ক্ষণিকের এ আবদার।
ভালোবাসার অফুরন্ত জল তবে চিরস্থায়ী কোথায়?
জননী ওই ভালোবাসার সাগর নিয়ে তব প্রতিক্ষায়।

ওহে ভালোবাসার কাঙাল ভালোবাসা খুঁজে বেড়াও,
ভালোবাসা তব কুটিরেই মোহিত তবু খুঁজে না পাও।
ভালোবাসার ছায়া চেয়ে তুমি ঘুরছ মাঠে-ঘাটে জটে,
সেথা কি আর মিলবে ছায়া যদি না ভিড়ো বৃক্ষ তটে।
যে মায়া-বৃক্ষের তুমিহীনা অনুভবে বহে সদা শূন্যতার,
ওহে যাযাবর, ভালোবাসার ছায়া পেতে যাও সে বৃক্ষ-ধার।

এই পৃথিবীতে দেখ কত নানা রঙ্গ ভালোবাসার বাহার,
সবই ভঙ্গুর মেকি ছদ্ম আর ক্ষণস্থায়ীর ক্ষীণ উপহার;
যার ভিত্তি তন্তুর বন্ধনে গড়া, টুটতে পারে অকস্মাৎ,
জেনে রেখ, পৃথিবীর সব ভালোবাসাই হবে ধুলিসাৎ।
শুধু মায়ের ভালোবাসাই অমর, অবিনশ্বর চির দিন,
যার হয় না বিনিময় যত দাও প্রতিদান, এ যে অমূল্য ঋণ।

আজ ভালোবাসার যত কাঙাল যত ভবঘুরে শোনো,
যারা খাঁটি চেয়ে ভালোবাসার নেশায় ঘুরছো এখনো;
মেলেনি প্রকৃত ভালোবাসা, তবে আর কর না আশা,
বহু ঘেঁটে বলছি শোন, জননী ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ চাষা,
যার শ্রেষ্ঠত্ব পরিমাপে তোমার মাপ যন্ত্রের হবে ভুল,
যাও সে জননী-দ্বারে, পাবে ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ কুল।


॥ ১৫ নভেম্বর ২০১৮; মাতৃ সান্নিধ্য, নিজ ভবন, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ ॥