এইত আজ হলো তোমায় হারানোর অর্ধ-দশক,
মনে হয় যেন করেছি রে পার দীর্ঘ অর্ধ-শতক;
কিংবা শতাব্দীও যে চলে যেতে পারে না-জানি!
কী করে এতগুলি দিন ভুলে থাকছ অভিমানী?

তবু আমি অদ্যাবধি বিশ্বাস করি তুমি হারাওনি,
কভু অন্য কাউকেও তোমার জীবনে জড়াওনি;
তুমি যেন জন্ম জন্মান্তরে কেবল এই আমারই,
আমার জন্ম যেন পূর্ণ শুধু আমি হলে তোমারই।

তেইশে ডিসেম্বর দুই হাজার ষোল এল জীবনে,
তুমি জায়গা করে নিলে সেদিন অভাগার মনে;
ভালোবাসার অবলা আবদার লয়ে তব মননে,
বললে একসাথে কাটাব জীবন আমরা দুজনে।

তখন আমি যেন পেয়েছিলাম ধরার শ্রেষ্ঠ সুখ,
আর প্রাণ ভরে দেখেছিলাম সেদিন তব ও-মুখ;
বুকের বামে তোমার নামে সাজিয়েছিলাম ঘর,
সে যেন ছিল অনন্তকাল বাসেরই ভিত্তি-প্রস্তর।

যৌবন ডাকা জীবন নদে আরম্ভ তরঙ্গ-উত্তাল,
ক্ষণে জোয়ার ক্ষণে ভাটা ক্ষণেতে টালমাটাল;
এহেন হালেই চলছে মোদের সম্পর্কের স্রোত,
দুষ্টু মিষ্টি অনুরাগ আর মাঝে মাঝে অবরোধ‌।

অতঃপর এল পনেরই জুন দুই হাজার সতের,
সবকিছু ছাপিয়ে-টাপিয়ে সময় এল অন্তেরও;
হৃদয়টাকে কাঁপিয়ে ধরলে চেপে মম নিঃশ্বাস,
কাঁচের মতো ভেঙে দিলে দিলের স্বচ্ছ বিশ্বাস।

আমি আজও সেই তেইশ আর পনেরর মাঝে-
আছি ডুবে, যাইনি উবে, ভুলতে পারি না যে;
কী করে ভুলব বলো? ভুলে যেতে ভালোবাসিনি,
তুমি দূরে গেলেও আমি যে দূরে যেতে পারিনি!

হয়ত কিছু ভুল আমার ছিল, কিছুটা তোমার,
ছোটখাটো সে ভুল কি যোগ্য হতো না ক্ষমার?
কেন ছেড়েই যেতে হবে? চিরতরে হারাতে হবে!
এত জীর্ণশীর্ণ ভালোবাসায় কেন বাঁধিলে তবে?

আজ অর্ধ দশক পরেও আমি তোমার অভাবী,
একটা তুমি আর তোমার অভাব পূরণের দাবি—
এখনো হৃদয়ের; কোথা পাই তোমারে বলো না?
সব সপ্ন দুঃস্বপ্ন হলো, ঘর বাঁধা আর হলো না!

আমি এখনো মুখিয়ে আছি তুমি আসবে বলে,
এখনো বিশ্বাস করি সব ভ্রম, তুমি যাওনি চলে;
খুঁজবেই তুমি আজ নয় কাল, যাক দিন যতক,
পার হোক হেন অর্ধ-দশক, দশক কিংবা শতক।



রচিত: ১৫ জুন ২০২২; মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭