তোমার দেয়া ব্যথা কেবল আমার কবিতা’ই নয়;
পুরো একটা স্বতঃস্ফূর্ত পাণ্ডুলিপি,
ওহ্, একটা পাণ্ডুলিপি বললেও ভুল হবে,
সহস্র পাণ্ডুলিপি, আর আমার গোটা জীবন!
তোমার দেয়া ব্যথাই আমার তিন বেলার খোরাক;
কারণ- কবি’রা যে ব্যথা ভালোবাসে,
ব্যথাদের ভক্ষণ করেই বেঁচে থাকে,
এবং রচনা করে অজস্র নির্ঘুম রাত।
তোমার দেয়া ব্যথা’ই আমার ঘুমোতে গিয়ে নিদ্রাহীনতা;
চোখ বুজে ঝিমটি আসতে-আসতে
কিছু কবিতার লাইন মাথায় আসা,
তারপর ঘুম পালিয়ে প্রাণবন্ত কবিতার জন্ম হওয়া।
তোমার দেয়া ব্যথা’ই আমার অকারণে হাসির কারণ;
হাসি আর ভাবি- ‘কার জন্য কবিতা লেখি?
সে হয়ত জানেই না তার জন্য কবিতা জন্মায়,
সে হয়ত পড়বেও না এই কবিতা’, —তবুও লেখি।
তোমার দেয়া ব্যথা’ই আমার শহুরে বন্দী জীবন,
চার দেয়ালের ভেতরেই স্বাচ্ছন্দবোধ করা,
একাকীত্ব আর নির্জনতাকে ভালোবাসা,
আর কবিতায় অন্তর্মুখী আর্তনাদ করে যাওয়া।
তোমার দেয়া ব্যথা’ই আমার মৃত্যু ছোঁয়ার ইচ্ছা;
পৃথিবীর সর্বোচ্চ দুঃখের স্বাদ পাওয়ার পরে:
মৃত্যুর স্বাদই কেবল বাকি থাকে জীবনে,
সাথে প্রিয় মানুষের একটা অনন্ত শূণ্যতা।
তোমার দেয়া ব্যথা’ই আমার এক সাগর উপলব্ধি;
এরকম হাজার কবিতার অবকাশ হলেও:
ফুরাবে না এক ফোঁটা, এ যে উপশমহীন ব্যথা,
আর তোমার দেয়া ব্যথা’ই আমার কবিতা।
#কাব্যগ্রন্থ: জীবিত লাশের চিরকুট;
(রচিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩; মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭)