বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সাথে মিশে যাচ্ছেতাই ছিলাম,
মম অঙ্কুর সৃষ্টিতেই যুক্ত হলো সীমাবদ্ধতার;
জনমে জন্ম নিয়ে সে কি বদ্ধ সমীকরণ!
যাচ্ছেতাই করার এখানে নেই তো ছাড়।

এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পরে মানুষ দ্বিতীয় বিস্ময়,
অসীম শক্তির পরেও কক্ষপথের তাঁবেদার;
মানুষ সে তো মানুষ নয়, ব্রহ্মাণ্ডের যন্ত্র,
যেভাবে ঘুরায়, ঘুরতে হয়, নেই তো পার।

‘স্বাধীনতা’, সে তো অভিধানের শব্দ কেবল,
মানুষের জন্য প্রযোজ্য নয় একটুও তার;
এখানে বাঁচতে হয়, বাঁচতে হলে মানতে হয়,
মানতে গিয়ে মানুষ বিসর্জন দেয় স্বাধীনতার।

পা আছে, চলার স্বাধীনতা নেই কোনো,
ছোট্ট একটা পৃথিবীতে অজস্র কাঁটাতার;
একই গ্রহে বসবাস, তবু ওপারে সবাই পর,
সীমানার জন্য প্রাণী আমরা চিড়িয়াখানার।

চোখ, মুখ, কান আছে, শুধু ব্যবহার নিষেধ,
অবাঞ্ছিত হয়ে যাব যদি করি যথার্থ ব্যবহার;
এখানে সব আছে, কেবল স্বাধীনতা নেই,
স্বতন্ত্র প্রাণী নামে আমরা পূজি সীমাবদ্ধতার।

মানুষ সে তো ছাড়াতে চায় আপন সীমানা,
তাকে আটকানো হয় চতুর্দিক থেকে বারবার;
এখানে আছে সমাজ নামের বদ্ধ প্রতিষ্ঠান,
যেখানে মানুষই মানুষের কারণ বড় শত্রুতার।

এখানে আছে প্রকৃতির নিয়ম, আছে নিয়তি,
সুযোগ নেই কারো কোনো সীমানা ছাড়াবার;
প্রাণে বাঁচতে হলে সইতে হয় প্রাণের আঘাত,
সাহস নেই কারো শৃঙ্খলা ভেঙে দাঁড়াবার।

শুধু একটা মৃত্যুর ভয়, আর সীমাবদ্ধতা নেই,
তবে মৃত্যুকে কেন ভয়? এ অনিবার্য সবার;
জন্ম-মৃত্যুর সীমাবদ্ধ জীবন-তন্ত্র আর নয়,
এবার মিছিল হোক সব সীমাবদ্ধতা ভাঙার।


রচিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪; সোলাই-১৮, আল-মাশায়েল, রিয়াদ, সৌদি আরব।