বিশ্ব কিংবা মহাবিশ্বের যেদিকে তাকাই,
      বিচলিত প্রতিটি দর্শনে জন্মে আকাশচুম্বী
                  প্রশ্নচূড়া আর বিস্ময়ের কোলাহল!
   বিরল যেথা: দাড়ি, কমা, কোলোন, সেমিকোলোন
                             কিংবা হাইফেনের সচরাচর ব্যবহার;
প্রশ্নবোধক আর বিস্ময় চিহ্নের অতিকায় প্রযোজ্যতা
       করেছে দখল জীবনের প্রতিটি দর্শন বাক্যের প্রতিক্রিয়া।

                যার একটি ভাবনার উপাদান হলে স্থির,
স্পৃহা যেন দাড়ি-কমাহীন লেখি লাগাতার,
                   বিনা দমে, পঙক্তির বিনা সমাপ্তিকায়
এক বাক্যেই ভূপৃষ্ঠ হতে মহাশূন্যকে বেষ্টনী দিয়ে আসি;
       মৃত্যুর স্বাদ উপলব্ধি করে আসি, আবার জন্ম নিই,
          নতুন কিছু প্রশ্ন আর বিস্ময়ের আবির্ভাব ঘটাতে!

যেদিন জন্ম নিলাম, ___সেদিন হতেই প্রশ্নোদ্ভব:
    ‘কেন জন্মিলাম আমি?’
           আর জীবনের আয়ূ ঘিরে
                 অহরহ বিস্ময়ের জাল বুনে যাচ্ছি নিরবচ্ছিন্ন।
আবার মৃত্যুর অমোঘ বাণী শুনে কর্ণ ঝালাপালা!
  নাকি মরতে হবে! ___কেন মরব? কোথায় হারাব?
     যদি হারাবই, তবে কেন এই আমি’টার জন্ম-যোগ?

আমি কার অবদান? এহেন জন্মটা দিলো কে?
     কিসের তাড়নায়? এই দেহ কার? কার আত্মা?
         এ প্রসন্নতা কি আধ্যাত্মিক, নাকি জৈবিক মাত্র!
               আমার অস্তিত্ব আর অবয়ব কোন সূত্রে গড়া?
                 ___এটা আমি! ___এ আমার অস্তিত্ব!
আর এতে কিনা আমারই নেই কোনো ইচ্ছার অবকাশ!
  নেই হস্তক্ষেপ, নেই পুনরাবৃত্তির কিংবা ধরে রাখার সাধ্য!
      আসলে ‘আমি’ বলে কি কোনো জীবন্ত শব্দ আছে?
নাকি এ— নিয়তির অপুনরাবৃত্তিক এক কল্পরূপ?
     যার অতীত-ভবিষ্যত নেই, সাম্প্রতিক ধোঁয়াশা কেবল!
এ কৌতুহলেই আমাতে এভারেস্ট হেন
                                প্রশ্নচূড়া আর বিস্ময়ের কোলাহল!

আমি বড্ড প্রশ্ন করি! করেই চলি;
     কেন এত প্রশ্ন করি? কাকেই বা করি?
                 কেউ তো আসছে না উত্তর দিতে!
                       ভুরি-ভুরি প্রশ্ন আছে, নেই উত্তরদাতা;
     অহরহ কৌতুহল আর প্রশ্নেরা তাড়ায় প্রতিটি মুহূর্তে।
আমি বড্ড কৌতুহলী!
              আজ তার এক ফোঁটা লিখে যাচ্ছি কবিতার ভাষায়।
ভাষাহীন, অনাবিষ্কৃত অজস্র ভাবকথার বাস
                             আমার এই মস্তিষ্কের অতল গহ্বরে।
   কিছু জ্ঞাতব্য পাগলামো তোমাদের তরে সঁপে দিলাম,
          ___হয়ত সংজ্ঞায়িত করতে পারবে।
দুর্গেয়’রা না হয় আমাতেই থাক, নিরবে, একান্তে,
                                 অসীম অনন্তেও যার হবে না গ্রন্থ!

  যদি হাজার কিংবা লক্ষ গ্রন্থও রচি আমি,
            এ প্রতিভার নির্যাস লেশমাত্র হবে না হ্রাস;
   হামেশাই নব-নব উদ্ভাবনের হয় আমাতে উদ্ভব।
হয়ত আমার সব আবিষ্কারের সম্ভাব্যতা মিলবে না;
   কারণ, আয়ূ যে আমার খুবই স্বল্প!
        অজস্র কথা অপুষ্ফটিত রয়ে যাবে,
             অজস্র গ্রন্থ অপ্রকাশিত থেকে যাবে,
                          অজস্র রচনা অপূর্ণতায় ভুগবে,
তারই মাঝে আমি আচমকা লুক্কায়িত হব অনন্ত ডহরে!
আর কবিতাকে দিয়ে যাব ছুটি অনির্দিষ্টকালের তরে।

     আমি কৌতুহল নিয়ে ভিড়েছি এই ভবে,
এ কৌতুহলে ডুবাব বিশ্বকে, অতঃপর হব ইতিহাস।
     আমি এসেছি কিছু দিতে, কিছু নিতে,
                     —এসেছি তাকলাগাতে ধুমকেতু হয়ে।
       মস্তিষ্কের মহা-শিক্ষাঙ্গনে আমি করি অধ্যয়ন,
আমার সংজ্ঞায় করি সংজ্ঞায়িত প্রতিটি বস্তু অবস্তুকে।
    আমি তোমাদের কৃত্রিম বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়,
নেই প্রয়োজন অযোগ্যকে যোগ্য প্রমাণের সনদ;
    প্রকৃতির সনদে তুষ্ট আমি, পেয়েছি বিশ্ব জয়ের বার্তা!
      পেয়েছি খুঁজে সত্ত্বা, স্বনির্ভর জীবন, স্বনির্ভর আত্মা;
যার সমন্বয়ে আমিই রচিত হব বিশ্বময়
                এক ‘মহা বিস্ময়ের প্রশ্নচূড়া’।


০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯; শয়ন স্থল, স্ব-নীড়।