এই আক্ষেপ দেখাই কারে?
আর এই লজ্জা কার তরে?
কেন হলো বাহান্নের ওই ভাষা আন্দোলন?
কেন হলো একাত্তরের ওই মুক্তিযুদ্ধ বরণ?
কেন দিলো ঐ সালাম রফিক ওদের স্বপ্নমাখা নব প্রাণ?
কেন লক্ষ শহীদ জীবন দিয়ে রক্ষিলো এ দেশের মান?

আজ যদি এই দেখতে হবে,
এই পরিণামে বাঁচতে হবে!
আজ এ দেশে দেশপ্রেমিকের অভাব নেই,
অভাব শুধু পাই না প্রেমিক সত্যিকারেই;
মুখে উচ্চ বুলির ফুল ফোটে ওই ভণ্ড কূট মতলববাজের,
কত ছদ্মবেশী লুটছে হেঁকে দেশপ্রেম নামে হীন স্বার্থের।

এই পরিতাপ কোথায় রাখি?
স্বাধীন হতে দেশ এখনো বাকি।
কালোশক্তি-রেশ কাটেনি বহিঃ-অভ্যন্তরীণ,
দখলদারির সম্ভ্রমে দেশ এখনো সমাসীন;
লুটবে কে কি তাই ভেবেই ক্ষমতার গদি ঐ খুঁজে বধির,
শোষিতের থেকে দেশ বাঁচিয়ে এ কী পেলাম শান্তি নীড়?

বলতে গিয়ে বুক ফেটে যায়,
আক্ষেপে মোর সুখ হেঁটে যায়।
বাংলা ভাষায় জন্মে যে সুখ এই হৃদয়ে ধরি,
সেই ভাষাতে বলতে কথা বড় সংকোচে মরি;
বাঙালির সাথে বাংলায় বলি তবু বোঝাতে ব্যর্থ আমি,
মাতৃভাষা তাও বোঝে না, বাক কারাগারে বন্দী আমি।

ভাষাপ্রেমিকের অভাব নেই,
আহ্! গর্ববোধের জবাব নেই।
কত টান মুখে! বুক ফুলিয়ে ছাড়ে বুলি,
ফেঁসে যায় যদি বাংলায় লেখা গ্রন্থ খুলি;
আবার বলে গর্বিত আমি এ বাংলা ভাষায় জন্ম নিয়ে,
ওদের মুখে লাগাও তালা, বাংলা ভাষা নাও ছিনিয়ে।

যেই দেশে তুই জন্ম নিলি,
যেই ভাষাতে মুখ খুলিলি;
সেই দেশ তোর মন পায়নি ভিনদেশ ঐ দেখে,
সেই ভাষা তোর মনে গাঁথেনি বুলি যায় বেঁকে;
তবু ছদ্মবেশে পৌর সেজে এ দেশের সম্পদ কর ভোগ,
ও তোর নেই অধিকার থাকার দেশে না ঘুচলে এ রোগ।

দেশ তাদের জন্য হয়নি স্বাধীন,
যারা করে দেয় অন্যের অধীন।
এ দেশ আমার স্বাধীন ভূমি রক্ত প্রাণের দান,
নামধারী কোনো দেশপ্রেমিকের হবে না স্থান।
সোনার বাংলা, সোনার মানুষ, বিশ্বের আমরা প্রতীক,
সেই দেশে কেন ঠাঁই পাবে ইতর নামধারী দেশপ্রেমিক!



॥ রচিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮; নিজ ভবন, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ॥