ওরা কবিতাকে ছিনিয়ে নিতে চায়,
কবিকে হাতকড়া পরাতে চায়,
কবিকে নিয়মের কারাগারে বন্দি করতে চায়;
কবির কলম কেড়ে নিতে চায়,
কবির মুখ বন্ধ করতে চায়।
প্রগতিশীল ট্রেনের একটি বগিকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়,
পৃথিবীর অগ্রগতিকে থমকে দিতে চায়।

ওরা চায় কবি সবার মতো দাসত্বের শৃঙ্খলে চলুক,
অ, আ, ক, খ যা বলতে বলবে বীনা প্রশ্নে বলুক।
কিন্তু কবি কি তার মস্তিষ্ক বিক্রি করেছে?
না, করেনি।
তবে কবির মগজে কি ঘুন ধরেছে?
না, তাও ধরেনি।
তবে কবির শব্দে, বাক্যে, কর্মে এত বাঁধা কেন?

যে যুক্তি মানে না, সে মগজ বিহীন, কট্টরপন্থী;
যে উন্মুক্ত চিন্তা করতে জানে না, সে অমানুষ অথবা অন্ধ;
যে আবিষ্কার অনুধাবন করে না, সে অকৃতজ্ঞ, বেইমান;
যে নতুনত্ব খোঁজে না, সে অযোগ্য কিছু;
যে সৃষ্টি বোঝে না, তার দৃষ্টি নিচু;
যাকে সৃজনশীলতা আকৃষ্ট করে না,
তার মস্তিষ্ক অথর্ব, সে প্রেমহীন, হৃদয়হীন।

তবে কি কবির এক হীন-শহরে বাস?
নাকি অশুদ্ধ-তন্ত্রে করেছে গ্রাস কবির চারপাশ?
তবে কবিও কেন স্রোতে গা ভাসাল না?
কেন স্বার্থ লোপাটে ওদের কাতারে দাঁড়াল না?
অজস্র সাইক্লোনেও কেন কবি টলে না?
কেন অন্যের দেখানো পথে অন্ধের মতো চলে না?
কারণ কবি তো ছদ্মবেশী নয়, নয় স্বার্থপর,
কবি পৃথিবীর উন্নয়নে মানুষের মঙ্গলের সাধক।

সমাজ, ধর্ম, রীতির বাইরেও চিন্তা করা যায়,
ক’জনের মস্তিষ্কে ঠাঁই পায় হেন উপলব্ধি?
মুক্তচিন্তায় মুক্তি কেবল, উদারতার নেই বিকল্প;
বন্দিদশার শিকলে যার মস্তিষ্ক বদ্ধ,
পৃথিবী চলার মসৃণ পথে বাঁধা সেই জন।
এ কথা বলতেই কবি হয়ে যায় দ্রোহে দোষী।
হয়ে যায় বিদ্রোহী, ভুলে যায় তার গুনগ্রাহী।
তবে কবি অবিচল তার ধ্যানজ্ঞানে, দুর্নামের ভয় নাহি।


রচিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪; রিয়াদ, সৌদি আরব।