ঘরে যুদ্ধ বাইরে যুদ্ধ, চারিদিকে যুদ্ধ আর যুদ্ধ;
রাষ্ট্র যুদ্ধ, বিশ্ব যুদ্ধ, করতে সবে বেজায় উদ্বুদ্ধ।
দলের যুদ্ধ বলের যুদ্ধ, চতুর্দিকে যুদ্ধ কত যুদ্ধ!
যুদ্ধ-যুদ্ধ মননে মানব-শিরা-উপশিরা অবরুদ্ধ।

ব্যক্তি হতে বিশ্ব-পতির দেখি একই মনোভাব,
যুদ্ধ সবার রিপু’র ভূষণ, কেবল আমিত্ব স্বভাব।
তাই আমিত্বকে জয় করিতে যুদ্ধেরই ঘোষণা,
পরাক্রমী প্রভাব ছয়ার, এ যেন প্রতি’র বাসনা।

যুদ্ধ শুধুই দ্বিত্বমুখী নয়, নিজস্বতার মাঝেও হয়,
নিজ অন্তরেই দু’পক্ষের মতানৈক্য স্বকীয়তা রয়।
ব্যক্তি একক মতের বিরোধ, ইহা প্রায়শই জন্মায়,
এভাবেই আপনাতে একক যুদ্ধ সৃজন ঘটে যায়।

যুদ্ধ শুধু শত্রু সনে নয়, আত্মার বন্ধনেও হয়,
স্বামী-স্ত্রীর রণক্ষেত্রে বাস, অজানা কারো নয়।
বউ শ্বাশুড়ি, ভাই ভাই, করে যুদ্ধ পিতৃ পুত্রদ্বয়,
এভাবেই সংসার হয়ে ওঠে এক যুদ্ধের মহালয়।

শুধু নয় পরজনে ঘটেও স্বজনে যুদ্ধ কোলাহল,
আত্মীয়তার ভাঙনে হয় যুদ্ধ, মনে প্রীতির ছল।
এ যুদ্ধের তরে নিষ্প্রয়োজন ঐ ঢাল তলোয়ার,
কথার রেশ যথেষ্ট বেশ করতে হৃদ ক্রসফায়ার।

ধর্মে যুদ্ধ কর্মে যুদ্ধ, চলমান যুদ্ধ ধর্মশালায়ে;
একই রীতির শত বিরোধ, গর্জে মতান্তর হয়ে।
কর্মে আবার মাপের পাল্লা, কম বেশি দেয় কে!
স্বার্থপরী দৃষ্টিভঙ্গি সতত প্রয়োগ করে লোকে।

পদের যুদ্ধ গদির যুদ্ধ রাজনীতিতে বিরাজ,
নয় উন্নয়ন প্রভাব চয়ন মস্তকে করে কাজ।
নেতার আসন কার ভূষণ বাছিবে জনতায়,
কেন প্রার্থীরাই যুদ্ধ করে ঐ গদিকে হাতড়ায়

রাষ্ট্র পৃথক এক পৃথিবী এক মানবের বসত নীড়,
তবে কেন যুদ্ধ শিকার পরমাণু ছোড়ার হুমকির!
সৌহার্দ্যতা বজায় রাখো যুদ্ধে কেবলই ভ্রান্তি,
যুদ্ধ বিনা জীবন গড় মিলবে ঠিক প্রকৃত শান্তি।

যুদ্ধ-যুদ্ধ করে আজ পৃথিবী ধ্বংসের শেষ প্রান্তে,
কখন জানি হবে লয়, যুদ্ধ শিকার গণ-অজান্তে।
এমনই এক বাস্তবতার অভ্যন্তরে আমাদের বাস,
না জানি কোন যুদ্ধে ত্যাগিব কার শেষ নিঃশ্বাস।



॥ রচিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৮; আপন নীড়, বংকুরা, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ ॥