একদিন ছুটি হবে, অনেক দূরে যাব;
আমার হতে আমি জন্মান্তরে হারাব।

আমি ফিরে যাবার স্বাক্ষরিতে এসেছিলাম এথা,
কিঞ্চিৎ আয়ু লয়ে বিচরণিতে উচ্চাভিলাষী ভব;
দেওয়া-পাওয়ার হিসেবটা না কষতেই আবার,
চিরতরে বাকরুদ্ধ-মৌনতার সে গন্তব্যে পৌঁছব।


একদিন ছুটি হবে, নিথর হবে এই দেহ;
আমার মাঝে আমায় আর দেখবে না কেহ।

আত্মা শূন্যতায় করবে ভূষিত লাশের আখ্যায়,
আমি নিস্তব্ধতার সনে করব গূঢ় এক সন্ধি-বহ;
নিয়তির অবয়বে দিব চির ঘাঁটি দৃঢ় অভিমানে
আমি ছেড়ে তোমাদের এ স্বার্থান্বেষী ভব-মোহ।


একদিন ছুটি হবে, পৃথিবী ছাড়পত্র দিবে;
অফুরন্ত সেই ছুটি-ক্ষণ কভু না ফুরিবে।

তাই আয়ুসীমার অভ্যন্তরে নিজেকে লয়ে খুঁজে,
কৃতিত্বের শৃঙ্গ গড়ে অমরত্ব ছিনিব মৌন বিপ্লবে;
এহেন অভিলাষ মোর জন্ম পরেই করেছিল গ্রাস,
এ স্বপ্নীল প্রয়াস পুরাবই না হলে দিকভ্রান্ত তবে।


একদিন ছুটি হবে, সবার মতো যেতেই হবে;
বিত্তবান কিংবা রাজা-প্রজা কেবা ভবে রবে!

হাজারো লাশের মিছিলে আমিও হব জংশিত,
আর মৃত্তিকার চাপা চক্র আটকে দিবে দৃঢ়ভাবে;
বিশ্রব্ধতায় সেথা পোকামাকড় ছিঁড়েকুঁড়ে খাবে,
মম অস্তিত্ব হবে লীন কভু না আর পূর্ণতা পাবে।


একদিন ছুটি হবে, নিজের নিয়ন্ত্রণ হারাব;
চিরতরে সর্বস্ব সঁপে নিয়তির বশে চলে যাব।

একদিন যেতেই হবে, যে ছুটি ফুরাবে না আর,
তবে মনে রেখ আমি প্রতিটি সত্তায় বিচরণ করব;
ক্ষুণ্ণ হব না কখনো যতদিন রবে ধরাধাম অক্ষুণ্ণ,
আমি যুগান্তর, প্রতিটি অন্তর মম অমরত্বে ধরব।



॥ রচিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মাঝবাড়ী বাস-স্ট্যান্ড, মাঝবাড়ি, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ ॥