(প্রতিকথা: ভারত উপমহাদেশের গ্রাম্য সমাজের বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে কবিতাটি। —এমনই একটি ঘটনা (০২.০৩.২০২১) পত্রিকায় দেখি: মেয়ের বয়স ১৮/১৯, এখনো বিয়ে হয় না বলে পাড়ার মানুষের কটু কথা শুনতে-শুনতে এক পর্যায়ে মেয়েকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় স্বয়ং জন্মদাত্রী মা। গভীর ধ্যানে উপাসনারত অবস্থায় সুযোগ পেয়ে পেছন থেকে এসে বটি দিয়ে কুপিয়ে মস্তক আলাদা করে ফেলে। এ ঘটনা প্রচণ্ড পীড়া দেয়। তারপর এই ‘সমাজকে হত্যা করো’ সৃষ্টি হয়।)
👇
কার বেডরুমে ছিটকিনি নেই, কার মোরগের ডাক ভালো না!
কার ছেলেটির নেই ভবিষ্যৎ, কোন মেয়েটির বিয়ে হলো না;
এমনও গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগার!
যেথা নেই তো অভাব বেতন ছাড়া কর্মী পাবার;
কারা করেন তবে এ মহান কাজ?
যাদের আছে এক প্রকার মানসিক রোগ ‘সমাজ’।
পাড়াতে কার ঘরে কি ঘটছে কবে কান পেতে তা শুনতে হবে,
চায়ের দোকান সে তো সংসদ ভবন, চা-খোররা সব এমপি তবে;
বেডরুমে কে করল কী আজ!
এসব বিচার-বিশ্লেষণ এমপিদের নিয়মিত কাজ।
সবকিছু ভুলে যাবে এ সভা নয়,
না হলে যে ওদের পেটে ভাত হজম আটকে রয়।
আমার ঘর আমার পরিবার, দায়টাও তাই কেবল আমার,
আমার কিংবা আমাদের যা’ই হোক, তুই কি দিবি খাবার?
মরলে ক্ষুধায় ফিরে দেখবি কি?
দিবি না তো খাদ্য, তবে তোর কী সমাজ তোর কী?
উপকারে নেই করো অপকার,
সাধু বেশে ফের ভাব নিয়ে ঢের যাও করতে বিচার!
সমাজের অন্যতম মিডিয়া ‘নারী’, নারীর ইজ্জত নারীই হটায়!
বেশ্যার চেয়েও নিম্নজাত যার রয় কানখাড়া কে কবে কী ঘটায়!
এর কথা ওর কাছে, ওর কথা এর,
কাজ ফেলে ঘেঁটে-ঘেঁটে সকলের খুঁত করে বের;
কি-যে স্বাদ লাগে হায় পরনিন্দায়!
ইচ্ছে করে ডুবাই ধরে ওদের নিজের পায়খানায়।
কার ছেলেটি কোথায় গেল, কার ঘরে মেয়ে বড় হলো!
কার মেয়ের বিয়ে আগে হলো, সে’ই বিজয়ের মেডেল পেল।
— আমার মেয়ে আমার খাবে,
আমারই পড়বে থাকবে, তোর কী তাতে বিন্দু যাবে?
আমার ছেলে আমারই রবে,
তোর ঘরে কি শুইতে যাবে? কেন তোর জ্বলবে তবে?
বেশ্যারও এক ধর্ম আছে, পুরুষ পূর্বেও সমাজ চালিয়ে গেছে,
ওরে নষ্ট নারী ভণ্ড পুরুষ আর কত চাকর হয়ে থাকবি বেঁচে?
গোলাম কে-বা রাখছে তোকে?
খেয়ে-পরে নিজের তুই কেন মরিস অন্যের শোকে?
পর-চাটা স্বভাব কবে যাবে আর?
লজ্জা কি তোর নাই, ঘেন্না কি তোর নাই জানোয়ার?
আর নয় আর নয় দাও হুঙ্কার,
এই সমাজের কাপড় খোলো, দেখ তলে কী রং কার,
আত্মহত্যা কিংবা নয় খুন আবারো,
এবার সোজা ঠাণ্ডা মাথায় এই সমাজকে হত্যা করো!
রচিত : রাত্র চতুর্থ প্রহর, ৩টা হতে সকাল ৬টা, ০৩ মার্চ ২০২১, শয্যাবস্থা, পিতৃ ভবন, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।