বয়সের সাথে জীবনচক্র বুঝে উঠতেই-
যখন একাকিত্ব অনুভূত হয়,
সেই অনুভূতির বিপরীতে প্রথম যেই ভালোবাসা জন্মায়,
সেই ভালোবাসার মতো সুখের উপলব্ধি এই পৃথিবীতে নাই।
আশি বছরেও মানুষ এক টুকরো সেই প্রথম-ভালোবাসা খোঁজে,
ভালোবাসা বড় অদ্ভুত এক উপকরণ!
হাসি-কান্না আর মন খারাপের একমাত্র কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা
প্রাণপ্রিয় আজ কার যেন সুখ-দুঃখের যোগান দেয়।
বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ভাবা মানুষটা আজ
কার যেন নিঃশ্বাসের ইন্ধন হয়।
মায়াগুলো আজ বন্ধনহারা মরু-শাহারা,
—শুধুই ধুধু বালুচর।
মরীচিকার মতো নিরাশ করে হারিয়ে গেছে,
থেকে গেছে তৃষ্ণা, এক টুকরো স্বপ্ন ধরার তৃষ্ণা;
এই স্বপ্ন বোধহয় আজীবন অধরাই থেকে যাবে।
সোনালী স্মৃতি আর বর্ণালী অনুভূতির রসায়ন ফেলে
জীবন প্রতিনিয়ত কেমন সব নতুন নতুন বাস্তবতার আইনে
দন্ডিত আসামি হয়ে চলেছে;
একসময় এই আসামির মৃত্যুদণ্ডও হয়ে যাবে!
আর ভালোবাসা চিরতরে কক্ষপথ হারাবে।
না পাওয়ার কাছে নুয়ে পড়ে তৃষিত আত্মা বলবে:
জীবন অতি সুন্দর হতো ভবে,
যদি ভালোবাসার উপকরণ না হতো তবে।
পাওয়া না পাওয়ার সমীকরণ মিলুক আর না মিলুক,
জীবন চলছে না-ফেরার অন্তহীন যাত্রায়,
চলছে ছুটে অসীম পরিণতির দিকে।
চলমান প্রতিটি সেকেন্ড অতীত হয়ে দেহের বয়স বাড়ায়,
একটি মুহূর্ত হারায়, মস্তিষ্কের চাপ বাড়ায়,
সেই চাপে হঠাৎ-হঠাৎ স্মৃতিগুলো নিঃশব্দে গর্জে ওঠে,
বজ্রপাত হানে, বৃষ্টি হয়ে ঝরে, আবার শুকিয়ে যায়।
তবু ভালোবাসা ছোঁয়া হয় না, অধরাই থেকে যায়!
ভালোবাসা এত অদ্ভূত কেন?
পেয়ে গেলে আসে তিক্ততা, ছেড়ে গেলে জাগে মর্মতা।
কেন বিচ্ছেদই হয় জীবনের সম্ভাব্য ঠিকানা?
অবিচ্ছেদ্য ভালোবাসায় কি জীবন ধরে রাখা যায় না?
হয়ত যায়, অথবা যায় না;
কিন্তু আমার ভালোবাসা তো সখ্য ঠিকানাই খুঁজে পায় না!
তাই গন্তব্যহীন যাযাবর হয়ে আজও খুঁজে যাই প্রেম,
খুঁজে ফিরি ভালোবাসা, সেই প্রথম ভালোবাসা;
যেই ভালোবাসায় জেনেছি জীবন, চিনেছি মরণ,
অধরা সেই ভালোবাসা বড় অদ্ভুত এক উপকরণ।
রচিত: ২৬ মে ২০২৩; মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭