আমি মরলে যেন...
আমার লাশটা স্বজনদের সামনে না আসুক,
আমার মরদেহটা যেন মানবতার জলে ভাসুক;
উৎসর্গ করলাম আমার মরণোত্তর দেহটাকে,
আমার অঙ্গে যেন পৃথিবীতে অন্য কেহ থাকে।
আমি মরলে যেন...
বিভৎস এ লাশটাকে কেউ দেখতে না আসুক,
নিথর দেহ দেখে আমার শত্রু যেন না হাসুক;
প্রাণের প্রিয় বন্ধু যেন ভেঙে না পড়ুক কান্নায়,
পরিবার দেখে যেন কেঁদে না ভাসাক বন্যায়।
আমি মরলে যেন...
ঘুমন্ত কেউ শান্তির ঘুম ছেড়ে জেগে না উঠুক,
যেন মাটির বুকে কোদালের আঘাত না পড়ুক;
যেন বাঁশঝাড়ের ওই একটি বাঁশও না মরুক,
অন্ততঃ কয়েকবেলা চিল-শকুনের পেট ভরুক।
আমি মরলে যেন...
কেউ দেখে তার শুকনো চোখে জল না আনুক,
কারো উজ্জ্বল মুখটি বিন্দুমাত্র মলিন না হউক;
মগডালে বসে ডাকা কাকের মুখে হাসি ফুঁটুক,
আকাশে ওড়া ক্ষুধার্ত ঈগলটিও নেমে পড়ুক।
আমি মরলে যেন...
ঝাঁকে-ঝাঁকে মানুষ এসে কেবল কষ্ট না করুক,
খাবার খোঁজা এক ঝাঁক পিঁপড়ার লাইন পড়ুক;
মাংসাশী রাতের শিয়ালটাও একটু সুযোগ পাক,
বাকি থাকা হাড্ডিগুলোও কেউ কাজে লাগাক।
আমি মরলে যেন...
মাইকিং করে অহরহ মানুষকে না ডাকা হোক
সুখে থাকা মানুষগুলোর হৃদে না লাগুক শোক;
এই পৃথিবীর সবাই বড্ড অবিরাম সুখে বাঁচুক,
মরণোত্তর নিষ্ক্রিয় দেহটা সবার কাজে লাগুক।
✍️রচিত: ০৫ জুন ২০২০ নিজ বাড়ি কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ ও ১৩ আগস্ট ২০২৩, মোহাম্মাদপুর, ঢাকা-১২০৭।