সংখ্যাটি আঠারো, এ শুধু সংখ্যা নয়, যৌবনের মহালয়,
শিরায় শিরায় উপচে পড়ে যার উত্তেজনার সিন্ধু পয়;
তাই দ্রোহের হুতাশনে সবকিছু ভুলছি,
আকাশে বাতাসে ওঠে যার ব্রহ্মাণ্ড কম্পিত মহা ঝঞ্ঝা,
মৃত্তিকা হতে মহাশূন্য পরাজিত যার সনে লড়ে পাঞ্জা।
আমি সেই আঠারো বছরের তরুণ বলছি!

এ বয়সে দিগন্ত চিরে রক্তিম সূর্যের প্রখর খরা ছোটায়,
উত্তাপে দগ্ধ করে বৈরিতা সৃজে আপনারে পৃথ্বী গোটায়।
আজ আমি সেই আঠারো হয়ে চলছি।
আমি পৃথিবীর জন্য এক চির উপহার, আমি মহা প্রাণ,
আমার প্রাণে বহমান স্পর্ধার ধর্ম, আমি বিশ্বের ত্রাণ।
কেবল আমি আঠারো বছরের তরুণ বলছি!

নিয়মের বেড়ি এ বয়স তরে নিরুৎসুক এক অধ্যায়,
মানে না দুর্লঙ্ঘ্য বাঁধার সংঘাত, আসে না শঙ্কা পাত্তায়।
কত গিরি মহা-শিরই আমি পায়ে দলছি!
আমার ঊর্ধ্বে নেই কোনো শক্তি আমি সৃষ্টি মহাত্মার,
অমিত্র পীড়ন যত দুশমন করি সরেজমিনে একাকার।
হেতু আমি আঠারো বছরের তরুণ বলছি!

আমি সাইক্লোন আমি সুনামি আমি লেলিহান দাবানল,
আমি একাগ্র প্রবল বুঝি না মঙ্গল অমঙ্গলের দঙ্গল;
আমি নৃশংস কত উজ্জীবন যে মলছি!
আমি নাছোড়, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রাঁতির বিরাগে বন্দী,
এ বয়স জানে বড্ড ঘায়েল পটু নির্ভিক পরাক্রমী ফন্দি।
আমি যে আঠারো বছরের তরুণ বলছি!

আমার রক্ত টগবগিয়ে শূল ছোটায় ওই মুশল বেগে,
সম্মুখে যা ভষ্ম হবে তীব্র আঘাত চোট হানলে রেগে।
কারণ আমি আঠারোর দেমাকে ফুলছি,
চেতনায় আঠার বাহুতে আঠার, আঠার আমার নীতি,
আমার অনুকূলে শুধু আমারই একক সত্তার গাই গীতি।
কেননা আমি আঠারো বছরের তরুণ বলছি।

আঠার জানে প্রাণ নিতে প্রাণ দিতে আঠার চির নির্ভীক,
আঠারোর হাতে বন্দী পৃথিবী আঠারই জয়ের প্রতীক।
এই আঠারোর বুকে আমি স্বপ্ন বুনছি।
আঠার চির কালজয়ী, বিশ্ব ভরুক আঠারোর যৌবনে,
পৃথ্বী মুক্তির প্রমোদধ্বনি বাজে এই আঠারোর মৌবনে।
আর আমি সেই আঠারো বছরের তরুণ বলছি!


॥ রচিত: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮; স্ব-ভবন, বংকুরা, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ ॥