আমি সদ্য শায়িত লাশ, চারপাশে প্রচুর লোকজন,
কেউ বলছে খুন হয়েছে, কেউ বলছে আত্মহত্যা।
তাই আমার লাশের ময়না তদন্ত হবে;
আইনের লোক এসে আমার লাশটিকে মর্গে পাঠাল,
লাশ-কাটা ঘরে সে কি থমথমে পরিবেশ!
অতঃপর ছুরি-চাকু নিয়ে ডোম-এর আগমন,
কসাই-এর মতো আমার বুকটা চিরে দিলো!
কিন্তু আজ আর আমি ব্যথা নয়, প্রশান্তি লাভ করছি।
নিঃশ্বাস থাকতে আপন জনের দেয়া ব্যথা যত জমা বুকে,
আজ সে ব্যথার মুক্তি-দিবস, আমিও মুক্ত আজ।
বুকটা চিরে ডোম কিছুই পেল না হৃৎপিণ্ড ছাড়া,
তাই হৃৎপিণ্ডটা হাতে নিয়ে দেখে এখনো স্পন্দন হচ্ছে,
ডোম নিজেই ভয় পেয়ে মর্গ ছেড়ে পালিয়ে গেল,
কি যেন বলতে চাইছিল হৃৎপিণ্ডটা ডোম’কে,
বলা হলো না, আমার মৃত্যু রহস্যটাও জানানো হলো না।
অতঃপর কোন এক বিশেষজ্ঞ এসে চূড়ান্ত হয়ে বললেন:
—এ আর কিছু নয়, কোনো এক বিচ্ছেদের পরিণয়!
ভালোবাসার বিশ্বাসে যার নিশ্বাস প্রবাহিত হতো,
সে বিশ্বাস হারিয়ে নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে;
কিন্তু হৃদস্পন্দন এখনো দেহের নিয়মেই চলছে।
সে মরেনি এখনও, বোধহয় বেঁচে গেছে এ যাত্রায়,
যন্ত্রণা’রা মুক্তি নিয়েছে বক্ষ পোস্টমর্টেমের সুবাদে;
তবে আবার নিঃশ্বাস ফিরে পাবে প্রিয়তমার সাক্ষাতে।
—খবর দেয়া হলো প্রিয়তমাকে একটি সাক্ষাতের জন্য,
কিন্তু সে নাকি এখন খুব ব্যস্ততা দেখাচ্ছে, সময় নাই!
অতঃপর তার বিনা সাক্ষাতেই লাশটির দাফন হয়,
আর ময়নাতদন্তে লেখা হয়: ‘প্রিয়তমাজনিত কারণে মৃত্যু’।
—আহ্! এই হতভাগার সমাধিতে নাম ফলকে লিখে দিও:
‘লাশটা এখনো তার খুনিকে ভালোবাসে’।
—তবে এই ভালোবাসার যেন আর ময়নাতদন্ত না হয়।
রচিত: ১৪ মে ২০২৩, সাতমসজিদ হাউজিং, (চাঁদ উদ্যান), মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭।