মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মের পর দুশোটা দীর্ঘ বছর পেরিয়ে গেল। মাত্র চার বছর আগে আমরা পেরিয়ে এসেছি যুগপুরুষ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং ঈশ্বরচন্দ্রকে প্রায় একই সাথে বাংলার মাটিতে পাঠানো নিঃসন্দেহে এই মাটির প্রতি ঈশ্বরের আশীর্বাদ, কারণ বাংলার কবির আরাধ্য ঈশ্বর সচরাচর সরাসরি বিপদে রক্ষা করার শক্তি যদি না-ও দেন, বিপদে ভয় না করার, ভয়কে জয় করার উপকরণ বাংলার মানুষের মননে সাজিয়ে দেন। বিদ্যাসাগর ও মাইকেল যেন সেই দুই মানব-উপকরণ, যাঁদের সৃষ্টির মন্ত্রে বাংলার মানুষ পেয়েছে বেঁচে থাকবার ললিত ভাষার অস্ত্র।
চালু ভাষায় একটা কথা আমাদের প্রায়ই ব্যবহার করতে হয়। "এ ফ্রেন্ড ইন নীড ইজ এ ফ্রেন্ড ইনডীড"। বাক্যটির অর্থের ব্যাপ্তি আছে। কেবলমাত্র "প্রয়োজন" বিষয়টিকে বন্ধুত্বের মতো বিষয়ের আধার হিসাবে আমরা কখনোই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না- তবে সত্যিকারের যে বন্ধু নিজে সৃষ্টিশীল ও সমাজমনস্ক, তিনি তাঁর প্রকৃত বন্ধুর সৃজনসাফল্যে নিজেও বিভোর থাকবেন এবং প্রয়োজনে নিজের ক্ষতি করে হলেও সহযোগের হাত বাড়িয়ে দেবেন, সিংহপুরুষ বিদ্যাসাগরের কাছে এমন মনোভাবই প্রত্যাশিত এবং সমকাল তাঁর কাছ থেকে সেই স্বাভাবিক ব্যবহারই পেয়েছে।
অমর মহাকাব্য 'মেঘনাদ বধ'- এর স্রষ্টা মাইকেল মধুসূদন দত্ত বয়সে বিদ্যাসাগরের চেয়ে চার বছরের ছোটো ছিলেন। টাকাপয়সার অভাব মাইকেলের নিত্যসঙ্গী হওয়ার কথা ছিল না, কারণ তিনি যথেষ্ট ধনী পরিবারের সন্তান হয়েই জন্মেছিলেন। বৈভবে শৈশব কাটানো মধুসূদন দত্তের পরিচিত জীবনী পাঠ করলেই আমরা জেনে যাই আমাদের সাহিত্যের ইতিহাসের এই ট্র্যাজিক নায়ক নিজের উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করার পর পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির অনুরক্ত হয়ে পড়েন। বিদেশী সংস্কৃতির প্রতি তাঁর এ অনুরাগকে কটাক্ষ করেই তিনি নিজেই বঙ্গভাষা কবিতায় লিখেছেন, "পরধন লোভে মত্ত, করিনু গমন, পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি, কুক্ষণে আচরি"।
শুধু বিদেশে গিয়েছিলেন তা নয়, বিদেশে যাওয়ার সামাজিক বিধিনিষেধে অতিষ্ট হয়ে তিনি খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন। ইংরাজী ভাষায় তাঁর দখল ছিল প্রশ্নাতীত, কিন্তু ঐ ভাষায় কবিখ্যাতি সেভাবে অর্জন করতে না পেরে, পরবর্তী জীবনে তিনি বাংলাতেই লেখালেখি শুরু করেন এবং বাংলা, ভারত তথা গোটা পৃথিবীর হৃদয় জয় করে উনবিংশ শতকের সাহিত্যের দুনিয়ায় অন্যতম নায়কের আসনে বসেন।
মধুসূদন তাঁর ব্যক্তিগত জীবনকে, বিশেষ করে ব্যয়বাহুল্যকে নিজের আর্থিক উপার্জনক্ষমতার সীমার মধ্যে বেঁধে উঠতে পারেন নি। বিদেশে, সম্পূর্ণ অন্য সংস্কৃতির দিনযাপনে তাই দারিদ্র তাঁর নিত্যসঙ্গী হবে, এটাই স্বাভাবিক।
ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে যখন দেনার দায়ে তিনি দেউলিয়া এবং দেউলিয়া হবার কারণে সে দেশের আইন অনুযায়ী কারাবাস প্রায় নিশ্চিত, তখন তিনি বিদ্যাসাগরের শরণ নেন। আমরা জানি, বিদ্যাসাগর এদেশ থেকে সুদূর ভার্সাই শহরে দেড় হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়ে তাঁর বন্ধুর সুনিশ্চিত কারাবাস ঠেকিয়েছিলেন। টাকা তাঁর অঢেল ছিল, এমন নয়- নিজের কোনো সঞ্চিত অর্থ না থাকলেও বিদেশে বিপন্ন সখার জন্য তিনি অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন যথেষ্ট পরিশ্রম করে।
১৮৬৪ সালের ১৮ আগষ্ট মাইকেল মধুসূদন দত্ত সেই দেড় হাজার টাকা হাতে পান। দেড় হাজার টাকা নয়, তিনি ফিরে পেয়েছিলেন ধ্বংস হয়ে যেতে বসা জীবন, যৌবন, সন্মান। ঐ টাকাটি হাতে আসার আগের মুহূর্তে মধু-কবির হাতে ছিল ঠিক তিনটি ফ্রাঁ। "ঈশ্বর যাঁর সখা- তাঁর কিসের ভাবনা" ? মাইকেলের দারিদ্রজয়ের সংগ্রামে এ বন্ধুত্বের ইতিহাস সোনার রঙে না লিখে উপায় নেই। ঐ ১৮৬৪ সালেরই ডিসেম্বর মাসে আরও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদ্যাসাগর পাঠান মাইকেলের কাছে। আমরা অবাক হয়ে ভাবি, সেই বিদেশযাত্রার শেষে ব্যারিষ্টার হয়ে দেশে ফিরলেও ধনবান হওয়া মধুসূদনের কপালে ছিল না। তাই হয়তো, ঋণ হিসাবে পাওয়া এই অর্থ, পরে কখনোই তিনি ঈশ্বরচন্দ্রকে শোধ করতে পারেন নি। অর্থকষ্টে বিপন্ন সুহৃদকে ঋণদান নিঃসন্দেহে স্বাভাবিক ঘটনা, কিন্তু এই মহান ঋণ যেভাবে শেষমেশ অকৃপণ 'দান'-এ পরিণত হল, তাতে এটুকুই মন্তব্য করা যায়, স্রষ্টা আর এক স্রষ্টাকে চিনেছিলেন। এ তাঁদের মধ্যে নিছক বন্ধুকৃত্যের ঘটনা নয়। প্রেক্ষাপটে রয়েছে ভ্রাতৃসম বন্ধু যাতে অর্থক্লেশে ভগ্নোদ্যম হয়ে না পড়ে, যাতে সেই ক্লেশ তাঁর অমর সাহিত্যসৃষ্টির পথে অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়, সেই পবিত্র অভিপ্রায়।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের ব্যক্তিগত জীবন ছিল অত্যন্ত হৃদয়-বিদারী নানা ঘটনার সমাহারে পরিপূর্ণ। বিদেশ যাত্রার প্রবল ইচ্ছা ৩৮ বছরের রোমান্টিক তরুণকে অস্থির করে তুলছিল।
তিনি সুন্দরবন এলাকায় বেশ কিছু জমিজমার মালিক ছিলেন পৈতৃক সূত্রে। মহাদেব চট্টোপাধ্যায়ের ধর্মপত্নী মোক্ষদা দেবীর কাছে সেই জমি বাঁধা দিয়ে রফা হল, তিনটি পর্যায়ে তিনহাজার টাকা মধুসূদন পাবেন ইংল্যান্ড-এ বসে আর কলকাতায় স্ত্রী হেনরিয়েটা আর আর শিশুপুত্র পেতে থাকবেন মাসপিছু একশো টাকা। এই আর্থিক চুক্তি যথেষ্ট পাকা ছিল সন্দেহ নেই কারণ সেকালের ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী রাজা দিগম্বর মিত্র এ প্রসঙ্গে মধ্যস্থ ছিলেন।
১৮৬২ সালের ৯ই জুন মাইকেল 'বিলাত' যাওয়ার জাহাজে উঠলেন। মনে প্রবল বাঞ্ছা, ফিরবেন ব্যারিষ্টার হয়ে। অর্থ, সুনাম, যশের সাথে হাত ধরাধরি করে আসবে সাহিত্যসৃজনের সাফল্য। বিলেত পৌঁছানোর মাসখানেকের মধ্যেই ভর্তি হয়ে গেলেন 'গ্রেজ ইন'-এ। ব্যারিষ্টারি পড়া শুরু হল।
হঠাৎ এল খারাপ দিন। যাঁর কাছে জমি বন্ধক রেখে চুক্তি করা হয়েছিল, তিনি কলকাতায় রেখে আসা হেনরিয়েটা আর সন্তানকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলেন। পরপর বেশ কয়েকমাস এই টাকা না পেয়ে
হেনরিয়েটা বাধ্য হলেন টাকাপয়সা ধার করে পথের খরচ জোগাড় করে মাইকেলের কাছে ইংল্যান্ডে চলে আসতে।
শুধু অর্থনৈতিক কষ্টটাই হয়তো একমাত্র কারণ নয় । আমরা ধারণা করতে পারি, সেকালের কলকাতায় মাইকেলের দ্বিতীয় স্ত্রী হেনরিয়েটাকে কম বক্রোক্তি বা কটাক্ষের শিকার হতে হয় নি। মধুসূদনকে তিনি পর করে দিয়েছেন। মধুসূদন 'হিঁদু'-র ছেলে হয়ে জন্মালেও 'কেরেস্তান' হয়ে গিয়েছেন।
সাগরদাঁড়িতে মধুসূদনের ছেলেবেলা অতিবাহিত হলেও মাত্র তেরো বছর বয়সে তাঁকে কলকাতায় আনা হয়। স্থানীয় একটি স্কুলে কিছুদিন পড়ার পর তিনি তদনীন্তন হিন্দু কলেজ, যা বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে ভর্তি হন। মধুসূদন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি. এল. রিচার্ডসনের নজরে হয়ে ওঠেন। রিচার্ডসন মধুসূদনের মনে কাব্যের প্রতি পরম প্রীতি সঞ্চার করেছিলেন। হিন্দু কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ডিরোজিওর জীবনাদর্শ তাঁকে টানত । এছাড়া কলেজে তাঁর সহপাঠী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক, প্যারীচরণ সরকারের মতো মানুষ, যাঁরা ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা বুদ্ধিজীবি মহলে বিশিষ্ট স্থান অর্জন করেছিলেন । মোটামুটি আঠারো বছর বয়সে বা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রথম লগ্নেই বিলাতে যাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাঁর মনে জায়গা করে নেয়। একইসাথে লালিত হতে থাকে ইংরাজী ভাষায় মহাকবি হওয়ার স্বপ্ন।
যাই হোক, মধুসূদন যখন ওদেশে চলে গিয়ে অর্থনৈতিক দুর্যোগের মুখে পড়লেন, তখন কলকাতায় টিঁকতে না পেরে ঘরণী হেনরিয়েটা ইংল্যন্ডে চলে আসার পর আর ঐ বিপুল খরচের দেশে থাকা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হলো না।
স্বদেশ থেকে বিলাত যাবার ঠিক একবছরের মাথায় স্ত্রী হেনরিয়েটা ও পুত্রকন্যাদের নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে পাড়ি দিলেন মধুসূদন। ঠিকানা হল ভার্সাই শহর। সঙ্গী হল দারিদ্র্য, ঋণ আর আগ্রাসী অভাব। একে একে বিক্রি হয়ে যেতে থাকল প্রিয়তমার অলঙ্কার, গৃহের আসবাবপত্র, নিজস্ব গ্রন্থাগারের কষ্টসঞ্চিত অমূল্য নানা গ্রন্থরত্ন।
২রা জুন, ১৮৬৪ একটি চিঠি তিনি লিখলেন বিদ্যাসাগরকে। চিঠিটি বন্ধুত্ব ও সহমর্মিতার ইতিহাসে ঐতিহাসিক। তিনি জানতেন, স্বধর্ম ত্যাগ করে তিনি হয়তো অনেককিছুই হারিয়েছেন। তবে ঈশ্বরচন্দ্রের বন্ধুত্ব এতো পলকা কারণে হারানোর নয়। ঈশ্বরচন্দ্র তাঁর সৃজনজগতের সংবাদ জানেন। তাই পার্থিব নিজস্ব ধর্মাচরণে এই পরিবর্তন, তাঁর প্রতি ঈশ্বরচন্দ্রের বন্ধুত্বে ও সহমর্মিতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি, দাঁড়াতে পারে না। মাইকেল যদি তথাকথিত অসংবৃত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হওয়ার কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে থাকেন, বিদ্যাসাগরও সরল সরল জীবনযাপন করেও সচ্ছল ছিলেন না। বিদ্যাসাগর পরোপকার করতেন নিজেকে আকন্ঠ ঋণে নিমজ্জিত করেই।
প্রথম দফায় দেড় হাজার টাকা মধুসূদনকে পাঠাতে গিয়ে অন্যের কাছে তাঁকে ঋণ-ই করতে হয়েছে। মধুসূদন দত্ত তাঁকে কলকাতার নানা লোকের ঠিকানা দিয়েছিলেন যাঁদের কাছ থেকে তাঁর টাকা ফেরত পাওয়ার কথা ছিল ।১৮৬৪-র জুন মাসের চিঠিতে তিনি লেখেন, " ....ফরাসী দেশে কারাবাস করতে চলেছি, ওদিকে যদিও ভারতবর্ষে ৪০০০ টাকার মতো আমার পাওনা আছে, আমার ভাগ্যহীনা স্ত্রীকে সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়ের জন্য কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হতে হবে"।
আমরা দেখতে পাই, প্রথমে ঈশ্বরচন্দ্র চেষ্টা করেন মাইকেলের পাওনা টাকাগুলি বাজার থেকে ফিরে পেতে, কিন্তু সে চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় বন্ধুর কারণে তিনি নিজেই ঋণ গ্রহণ করতে এগিয়ে যান।
ঐ ১৮৬৪-র ডিসেম্বর মাসেই মাইকেল একটি প্রাপ্তি-স্বীকারপত্রে বিদ্যাসাগরের কাছ থেকে আরও ২৪৯০ ফ্রাঁ পেয়েছেন বলে জানান। ভারতীয় মুদ্রায় এই পরিমাণ হবে প্রায় কুড়ি হাজার টাকা, যার মধ্যে মধুসূদনের পাঠানো সম্পত্তির দলিলপত্র অনুকূল মুখোপাধ্যায়ের কাছে জমা রেখে জোগাড় করেছিলেন বারো হাজার টাকা। বাকি টাকা বিদ্যাসাগর ঋণ নিয়েছিলেন শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নের কাছ থেকে ও অনুকুল মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে।
বিদ্যাসাগরের এই সাহায্য না পেলে ১৮৬৫ সালে ভার্সাই শহরে ধারদেনা মেটানো হয়ে উঠতো না, জেলে যেতেই হতো। টাকা পেয়ে ঋণ ও কলঙ্কমুক্ত হওয়ার পর সেখান থেকে মধুসূদন ইংল্যন্ডে ফেরেন এবং আবার "গ্রেজ ইন"-এর পাঠক্রমে যোগ দিয়ে ব্যারিষ্টারি পাস করেন।
যদিও সব গবেষক একমত নন, মনে করা হয় ১৮৬৭-র ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতায় ফিরে মোটামুটি এক-দেড় বছরের মধ্যে মধুসূদন নিজের সব সম্পত্তি কুড়ি হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়ে নাকি তাঁর জন্য করা বিদ্যাসাগরের ঋণ মিটিয়ে দিয়েছিলেন। তবে তথ্যের সমস্ত সূত্র এ কথা বলে না। অনেকের ধারণা মধুসূদন শত চেষ্টা করেও বিদ্যাসাগরকে সে টাকা জীবদ্দশায় ফেরত দিতে পারেন নি।
মহাকবি মধুসূদনের জীবনের মহাকাব্যের নায়ক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । বিদ্যাসাগরকে নিয়ে যে তিনটি কবিতা তিনি লিখেছেন, তাতে ব্যক্তিগত স্তুতি নয়, আমরা পাই প্রকৃত বন্ধুর প্রতি বান্ধবের ওজস্বী সম্ভাষণ। "বীরাঙ্গনা" কাব্যগ্রন্থটি যেমন তিনি বিদ্যাসাগরের নামে উৎসর্গ করেছেন, তাঁর বিদ্যাসাগরের প্রতি অফুরন্ত ভরসার পরিচয় অন্য নানা ঘটনাতেও পাওয়া যায়। মতান্তর কখনো তাঁদের মনান্তরের কারণ হয়ে দাঁড়ায় নি।
চরিত্র, ভাবমূর্তিতে যথেষ্ট পার্থক্য থাকলেও, দুজনের বন্ধুত্ব আমাদের অবাক করে না। ভাষাসাহিত্যের নিবিড় অনুশীলন তাঁদের মনোজগতকে পরস্পরের প্রতি আকর্ষিত করেছিল, যে আকর্ষণের চর্চা আজো ঐতিহাসিক অতীত পেরিয়ে এসে, আমাদের মনকে আলোড়িত করে।