আজ তবে লিখব আমি কাহিনী অমর,
যার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে কুরুক্ষেত্র সমর |
হাজার যোদ্ধা হাজির মাঠে বীরত্ব দেখাতে,
কৃষ্ণ শুধু ব্যস্ত সবার ভাগ্য লেখাতে |
ভীম ,ভীষ্ম সেনাপতি তৈরী রাজ আদেশ পালনের,
কর্ণ বদলা নিতে চায় পান্ডবের কৃত অপমানের |
শঙ্খ ভেরী পানব সহসা উঠল বেজে ,
যুদ্ধে আগত সেনারা প্রাণ বিলোতে উঠল সেজে |
কৃষ্ণ আজ ছেড়েছেন মন্দিরে রমণীর আরতি,
তার বদলে আজ অর্জুনের সাথী কৃষ্ণ সারথী |
অর্জুন বলে চলো সখা যুদ্ধক্ষেত্রে যাই,
দুর্মতি দুর্যোধনের সৈন্যপানে একটিবার তাকাই |
বলামাত্র কৃষ্ণ রথ নিয়ে গেলেন বিপক্ষ পানে,
দেখে কেঁপে উঠল পার্থ হৃদয় অজানা অভিমানে |
যাদের জন্য রাজ্যভোগ তাদের চাই না মারতে,
এই বলে অস্ত্রত্যাগে অর্জুন বসলেন রথে |
কৃষ্ণ বললেন- পার্থ বলো কেন এই কাপুরোষিত ভয়,
এতে তো ভীরুদের মানায় তোমাকে নয় |
অর্জুন বললেন বন্ধু দেখো শত্রুপক্ষ আমার নিজের আপনজন,
কিভাবে ঘাতক হবো বলো পেতে মিছে ধন ?
কৃষ্ণ বলেন মিছে শোক করছো কেন মৃতদের তরে....
মেরেছে ওদের মহাকাল তুমি মারার কে....?
মহাকালের করাল গ্রাসে গিলেছি ওদের অনেক আগেই,
তুমি শুধু উপলক্ষ্য তাই আছো আজ যোদ্ধার সাজেই |
মৃত্যু হবে শরীরের মাত্র শোক তাই বৃথা জেনো ধনুর্ধর....
তুমি করো ক্ষত্রিয় ধর্ম জেনো আত্মা অজীর্ণ,অমর |
তবু যদি উষ্মা থাকে দেখো আমার বিশ্বরূপ,
দেখো অর্জুন সবাই মৃত সেখানে মহাকালের ভীষণ তোপ |
দেখে সে ভীষণ দৃশ্য অর্জুনের বোধ ফিরল,
রথ থেকে করজোরে কৃষ্ণ পানে উঠে দাঁড়ালো |
তুমি নও কৃষ্ণ আর সখা ,গুরু হয়ে আমার প্রণাম নাও,
কি আমার কর্তব্য গুরু তুমি বলে দাও.... |
কৃষ্ণ বলেন- হে পার্থ তোমার কাজ করো, অস্ত্র হাতে তুলে নাও,
ছেড়ে দাও ফলের আশা সব, তা আমায় ছেড়ে দাও |
যুদ্ধে জিতলে তুমি রাজা, হারলে জুটবে ক্ষত্রিয়ের মান,
পরাজয়ের চেয়েও মৃত্যুতে বরং মেলে বীরের বেশী সন্মান |
এই শুনে দুর্নিবার ধনু্র্ধর অর্জুন গান্ডীব হাতে নিল,
দুর্যোধন নামে সে এক ভীষণ হুঙ্কার দিলো |
গীতা সারাংশ এভাবে আমি করলাম বর্ণন,
কৃষ্ণনামে শুরু হোক জগতের শুভক্ষণ |