গ্রাম গঞ্জের গাঁয়
বায়িছে পথ আঁকা বাঁকাই-
জীবনের পথ সোজা নয়
স্হির গামী সিধা বক্রতায়,
হাঁকিছে তোমায় প্রকৃতির নিশানায়
জীবন গামে সিদে বাঁকা যায়।
ডাকিছে তোমায় গ্রামীণ বড়াই
বকেয়া দিশায় ফেলে আসা গাঁয়-
সবুজ প্রাণে প্রকৃতির দানে সহায়
সবুজ পানে গ্রাম গঞ্জের গাঁয়,
মানুষ নিখিলে আছে কতো চিত্রকায়
শেষে তুমি গাছটি মুড়োলে গাঁয়।

গ্রামের গাঁয় চাষে অতিরিক্ত ভূমির চয়
চাষের সহায় দূরবাসীর জীবিকা হয়-
গঞ্জের গাঁয় গাছ বৃক্ষের অক্সিজেন পাই
দূর শহরের গাঁয় সবুজের বালাই নাই,
ঔষধ গাছ বৃক্ষ লতা গুল্ম ফলমূল পত্র-হতে হয়
যতো ঔষধের গাছ অধিকাংশ গ্রাম গঞ্জে জন্মায়।
মানুষ হয়ে তাই করিছো সব বড়াই
গ্রামের ভূমিকে গড়িছো অবহেলায়-
বিখ্যাত মহান মানুষের আশ্রয়
ওদের উৎস মোহনা গ্রাম গঞ্জের গাঁয়,
গ্রামের গাঁয় শুদ্ধ অশুদ্ধ বলে নাই
যদি কিছু হয় সব সাদা মাটায়।

খোলা ঈশানে পৃথ্বীর ধরায়
মুক্ত নির্মলে বাতাস বাঁয়-
পুষ্প ফল গাছে গন্ধ ছড়ায়
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনিমুক্ত মালায়,
বিল-বুড়ির বিলে আম নারকেল তলায়
আজও বগ মৎস্য সূর্য্যরশ্মী ম্যালে বর্ষায়।
শ্যামলা মায়ের আঁতুড়ের গন্ধে
দিনশেষে গোধূলিতে জড়ায় লগ্নে-
পশু পক্ষীরা ভিন্ন সুরে গান গায়
জগৎ বিরহীর সুখদুঃখে সেই বেলায়,
কদম পল্লী শ্যামলা বাঁকের গাঁয়
বর্ষ ঋতু লগ্ন গ্রীষ্মে ফুল ফোটায়।

হিজল তলার বিলে ছমাস জল থাকে
বর্ষায় সোনা ব্যাঙেরা মিলনে নৃত্য করে-
দিনরাত ডাকে হাঁকে সুখে দুঃখে
ভুমির উপরে প্রভাতে সোনার আঁচল পাতে,
বিভিন্ন মৎস্য পক্ষীরা সামিলে আহার করে
তাল সেগুন বেগুনি খেজুর লম্বু গাছে নিত্য বাজে।
ভীমখালির মাঠে মিলনের হাট বসে
ফুটপাতের চতুরে বগ শামুক-ভাঙ্গা পক্ষীতে-
জমির ড্রেনে ভিটে-ছাড়া ভাটিয়ালী কাশফুল ফোটে
চন্দ্রমল্লিকা সূর্যমুখী বেল তুলসী দূর্বা প্রতিস্ফূটিত গড়ে,
পীড়তলা বকুলতলার ঘাটে নদীর বান ডাকে
বৃক্ষের ঝুড়ি নামে মায়েরা কাঁকে কলসিতে জল আনে।

খালের বুকে ধরা জীর্ণ ফাটলে
আঁধার বেঁধেছে বাসা অন্ধ রাতে-
পোড়া গ্রামটায় আছে গঞ্জের মাঝে
চারিধারে চর-বাঁধে বড়ই আপশোস মানুষে,
কালীমন্দির-টায় পোড়া গ্রামের মধ্যে
বট শীষ সবুজে ঈশান ছাওয়া ঝুড়ি নামে।
মন্দিরটা তেঘরিয়া গাঁয়ের কোদালিয়া নদে
দুষ্টুরা মাকে পুড়িয়েছে নিশিতে আগুন ধরিয়ে-
সরিষা ঘাটের শশ্মানে কোদালিয়া নদে
বট শিষির আঁচল দিয়ে আগলে ধরে,
জীর্ণ ধরা বাসা ফাঁকের মাঝে অন্ধ উঁকি মারে
মায়ের মন্দির বুকে কোদালিয়া নদী মিশেছে ইছামতি নদে।

ছিলো এক জগোর পুকুর গ্রামের ধারে
এক ছিলো ভক্ত কুকুর কানকাটা পাশে-
দিতোনা খাবার কেঁউ থাকিতো অনাহারে
তিনবেলা প্রহর গোনে প্রখরে সবার মঙ্গলে,
হঠাৎ এক ভিন্ন কুকুর আসিয়া মেলে স্থানে
দুজনেই ডাক ছাড়ে আঁকাশের কোণে গভীর রাত্রে।
থাকেনা কেঁউ আশেপাশে নিকট দূরে
পথ বেঁয়ে এক ভিখারী একবেলা আসে-
আসা যাওয়ার মাঝে দুএক মুঠো চাল দেয় খেতে
যাওয়া আসার পথে বিরহে দেশের গান করে,
দেশের মানুষ যদি দেশকে ভালো নাই বাসে
বোঝাও তবে কেমন করে দেশ রক্ষা পাবে।

সেখানে ছিলো এক দিনদুঃখি চাষা
দুমুঠো ভাত নাই জোটে দুবেলা-
যদিও জোটে একবেলা ভিক্ষার জেড়ে
তাও ন্যায় কেড়ে স্বার্থ সিদ্ধির মনুষ্যে,
যদিও হয়েছিলো একফসলা বৃষ্টির ফলে
তাও আবার নিলো লুটে জমিদার হিসেবে।
দিন যায় অনাহারে মানুষের পথ চেয়ে
ভুখারী দিনমজুরি গরীবরা মরে ক্ষুদে-
মানুষেরা বুঝেও না বোঝার ভান করে
তাই সমাজ হয়েছে অসমাজে মরছে কালের অকালে,
মানুষ হয়ে যদি মানুষকেই না বোঝে
তবে মান-হুঁশের মর্যাদা মানুষ রাখবে কেমোনে।

অজানা কতো ফুল পথের ধারে ফোটে
অসহায় নিরুপায় প্রখর প্রহর সহ করে-
অসংখ্য শতো পুষ্প পতিত ভূমিতে বিকশিত করে
প্রাকৃতিক প্রকৃতির রক্ষীতে নিঃস্বার্থ প্রকৃত রূপে পৃথ্বীতে,
স্বার্থবীনা প্রকৃতি প্রাকৃতিকে রক্ষা করে
স্বার্থ ছাড়া গুন্ গুন্এ পক্ষীরা দেশের গান ধরে।
মানুষ হয়ে মান-হুঁশ সত্যকে ভুলেছে মানুষকে
ভুল করলে দেশে মানুষ দেশরক্ষা কেমোনে করবে?
মানুষ ভুল করলে ভুলের মাশুল দিতেই হবে দেশে-
দেশের ভালোবাসা তুমি নিতে চাইছো কেড়ে
দেহ মাংস পেশী ফুঁটো শরীর দিয়ে মানুষকে,
স্বার্থে নিঃস্বার্থে মানুষ গান গায় দেশের পানে
দেশের জয় বিজয় ত্বরে চরে গ্রাম গঞ্জের গাঁয়ে।