এই পথে হেঁটেছি বহুবার। দেখেছি এইতো সেই টালির বাড়ি। পরিবর্তনের হাওয়া লাগলেও সেখানে ঘটেছে যা সেকি ভুলতে পারি?
বাড়িতে ঢোকার মুখে ছিল বাঁশের প্রবেশদ্বার। এইটুকু সম্বল ছিল গৃহস্থদের ও এই বাড়ির আত্মরক্ষার।
নিশি রাতে নিশাচর পেঁচারা বাড়ির টালির ছাদে বসে
রোজ তারস্বরে করতো চিৎকার। এ যেন ওদের জন্মগত অধিকার।
মনে পড়ে এক অমাবস্যার রাতে ঘটলো কী?
চারিদিক অন্ধকার। আলোর উৎস ছিল শুধুই মিটিমিটি করে জ্বলতে থাকা আকাশের তারা।
গভীর রাতে, কি জানি, হলো কী! বোধ হয় ঘুম
আসেনি। অনিদ্রায় বিছানায় শুয়ে থাকতে না পেরে আটপৌরে শাড়ি পরেই বেরিয়ে এলে ঘরের বাইরে।
অকুতোভয়, বাড়ির প্রবেশদ্বার ধরে রাতজাগা ওদের মতো দাঁড়াতেও ইতস্তত করোনি।
আকাশে চলেছে তখন মেঘেদের আনাগোনা,
তারাদের সাথে লুকোচুরি খেলা। মেঘের ফাঁক দিয়ে
টুকি দিতেও তারাদের ছিল না মোটেও অবহেলা।
দেখেছিলে মেঘের ফাঁক দিয়ে দিগন্ত ছুঁতে তৎপর ধূমকেতুদের স্বপ্নের দৌড়, সেদিনের সেটিই ছিল
সবচেয়ে বড় খবর।
মনে পড়ে ঘটেছিল যে অদ্ভুত কান্ডখানা?
ঠিকানা বিহীন ধূমকেতুগুলো শুরু করেছিল
আকাশের বুক চিরে ওদের প্রতিযোগিতার দৌড়,
কে আগে ছুঁতে পারে দিগন্ত রেখা। এমন দৃশ্য
সচরাচর যায় না দেখা।
ক্রমাগত ছুটেছে তারা সুখের ঠিকানা খুঁজে পাওয়ার উদ্দেশ্যে। এই দৌড়ে ওদের সকলের হার মানতে ছিল যেন মানা।
বোধ হয় ভাবেনি ওদের কেউই পড়তে পারে বিপাকে।
রাস আলগা ঘোড়ার মতো এভাবে ছুটলে ওদের রুখবে কে?
বাতাসে ভেসে উঠেছিল তারি সো সো শব্দ। তাতেই পেয়েছিলে কি খবর যেভাবেই হোক হতেই হবে আত্মনির্ভর? মনে জেগেছিল কি এমনি উদ্দীপনা যাকে থামানো গেল না?
মনে ঘোড়ার রাস চেপে বসলে তাকে কে আর থামিয়ে রাখতে পারে? সেই কারণেই কি ঘুটঘুটে অন্ধকারেই পা বাড়ালে বাড়ির বাইরে?
শুরু করলে স্বপ্নের দৌড়।
চলার সেই পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। তবুও থামলে না।
ছুটতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছ বারবার। হিসাব নেই, সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়েছ কতবার।
কিছু সময় পরে বিশেষ কিছুই আর আসেনি নজরে। কে জানে, সেই সময় হলো কী?
মেঘেদের সাথে সখ্যতা গড়তে গিয়ে কি নিমেষে
হারিয়ে গিয়েছ অন্ধকারে?