এইতো সেদিন ঠকঠক করে নড়েছে ঘরের
টেবিল, চেয়ার, আসবারপত্র, খাট বিছানা।
দেওয়াল ঘড়িটাও বাদ গেল না।
ভূ-কম্পন শুরু হয়েছে সেটা বুঝতে কারো
বাকি রইলো না। অনেকে ভয়ে আত্মচিৎকার
শুরু করলো।
মনে পড়ে হয়তো সারাদুনিয়া উচ্ছন্নে গেলেও
সেসময় সুখনিদ্রা ছেড়ে উঠে বসতেও ইচ্ছা
হলো না।
দেখেছি বারেক চোখ মেলে দেখলে খাঁচার
টিয়ে পাখিটা করেছে ছটফট, দেওয়ালে মাথা
ঠুকলো, ডানাও ছুড়লো খাঁচা থেকে বেরিয়ে
আসতে। হয়তো সেও বুঝেছে খাঁচাতে থাকা
আর মোটেও নিরাপদ নয়। দুর্ভাগ্য! খাঁচার
দরজা বন্ধ থাকায় বহুবার চেষ্টা করেও পাখি
একাজ করতে সমর্থ হয়নি মোটে।
তবুও তোমার হলো কী? সুখ নিদ্রা গেল না?
খাট থেকে নেমে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে
ইচ্ছা হলো না?
তোমার আদৌ মনে পড়েনি বসবাস করছো
যেখানে সেটি ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল? আগে
ভূমিকম্পে এখানে হয়েছে কত ক্ষয়ক্ষতি?
ইতিহাসেও জেনেছ মহেঞ্জোদারো, হরপ্পার
মতো কত নগর সভ্যতাও ভূমিকম্পের ধ্বসে
অতলে তলিয়ে গেছে।
চোখ মেলে যখন দেখলে ঘরের মেঝেতেও
ধরেছে ফাটল। ঘরের দেওয়াল থেকে প্লাস্টার
খসে পড়ছে অনর্গল।
তখনো বোঝোনি কি হতে পারে ভূমি ধ্বস?
এ অবস্থায় ভূগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা
উড়িয়ে দেওয়া যায় না। চারদিক থেকে আসা
আর্ত চিৎকারও কানে গেল না?
মনে জাগেনি ভয়? চোখ বন্ধ করে আবারও
শুয়ে পড়লে বিছানায়। কে জানে, কি স্বপ্ন
দেখেছো সেসময়! সুখনিদ্রায় কাটালে এমন
কত কি হয়!
বোধ হয় বড্ড দেরি হলো। এতোটা দেরি
না-হলে ভালো হতো।
এখন ভেঙেছে ঘুম? দেখছ নিশ্চয় ক্রমেই
তলিয়ে যাচ্ছে ঘরের মেঝে। এখন ঘর ছেড়ে
বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পাচ্ছো কি?