বেরিয়েছি পালতোলা নৌকাতে চড়ে,
যাবো বলে শান্তিপুরে। সবেমাত্র শুরু,
যেতে পেরেছি আর কত দূরে?
যখনি মায়ের কোল থেকে নেমে পাশে
বসেছি, হঠাৎ হলো এ কী? উঠলো ঝড়।
দাপাদাপি শুরু করলো যেন শত সহস্র
বাঁদর।
সেই যে শুরু, এখনও থেমেছে নাকি?
কে জানে, আর কত কাণ্ড ঘটাতে বাকি!
এখন ঝড়ে পাল ছিঁড়ে খানখান। উপরি
পাওনা, শুরু হয়েছে ভাটার টান।
এই অবস্থায় মাঝির নাও সামলানোটা
সহজ নাকি? সে হয়েছে নাজেহাল।
কালবিলম্ব না করে থামালো তার কন্ঠে
ভাটিয়ালি গান।
উজানে গন্তব্যে পৌঁছতে মন করলেও
আনচান, ও হরি! গন্তব্যে পৌঁছাবো কি?
ভয়ানক দুলছে তরী, দুরু দুরু করছে
বুক।
ঝড় থামছে তো নয়, বরং এমনি বাড়ছে,
মাঝি তার কাছে হার মেনে হাল ছেড়ে
পাটাতনে বসেও পড়েছে।
দিশেহারার মতো এদিক সেদিকে ঘুরছে
তরী। পড়েছি ভারী মুশকিলে। কালেভদ্রে
এমন ঘটনা ঘটেছে আগে।
দুখের অন্ত নাই, যাই বলো, শান্তিপুরে
যাওয়া হলো কোথায়? সামনের দিকে
গড়ালো না আর সুখ রথের চাকা।
এখন অশান্তিকে সাথে নিয়ে ভাটার টানে
ক্রমাগত শান্তিপুর থেকে যাচ্ছি দূরে সরে।