কাজ নিয়েছি যদিও শর্ত সাপেক্ষে
অতন্দ্র প্রহরী হয়ে সমুদ্র সৈকত প্রহরায় রাজি,
কথা দিয়েছি রাতদিন তাকে রাখবো প্রহরায়
সেখানে ঢুকতে দেবো না কোনও জমি মাফিয়া
কাঁধেও তুলে নিয়েছি এ কাজের দায়।
হুজুর, নিয়োগকর্তাকে কথা দিয়ে কথা রাখতে পারিনি
রাতে লেগে পড়েছি নিদ্রাদেবীর আরাধনায়
সেই যে ঘুমিয়েছি, এক যুগ গেল ঘুম ভাঙ্গেনি
কুম্ভকর্ণের ঘুম, ভাঙতে বড্ড দেরি হয়েছে।
সেসময় জমি মাফিয়াদের বেড়েছে দৌরাত্ম্য,
দুঃখের কথা বলবো কত?
তারা আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে
সমুদ্র সৈকতের বনভূমি সাফ করে দিয়েছে,
তারপরও থাকেনি চুপ করে বসে
প্রভাবশালীদের কাছে সেই জমি হাতবদল করেছে।
এখন সেই জমি নেই মোটেও ফাঁকা,
গড়ে উঠেছে অজস্র সুবিশাল অট্টালিকা
অবৈধ নির্মাণ, লোভ লালসার রাস টেনে ধরলে
প্রকৃতি ও জীবজগতের কথা একটু ভাবলে
হয়তো আইন মেনে নির্মাণ কাজ করা যেতো
বিবেচকের মতো কাজ করলে
এখন হতে হতো না এতো বিব্রত।
ক'জন লোভ লালসাকে করতে পারে সংযত?
ওরা এখনও আইন ভাঙ্গার কাজে রত।
হুজুর, একবার এসে দেখুন
দোহাই, রেগে হবেন না তেলে বেগুন
সেখানে এখন চলছে রমরমিয়ে হোটেল ব্যবসা
চলছে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের যাওয়া আসা।
সেখানে না- হয় প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে
যেন একেবারেই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত।
হুজুর, যে কথা বলার জন্য গলা করছে উসখুস
ইচ্ছা হচ্ছে না করতে আর ইতস্তত
বলি, এ কথা অস্বীকার করার নেই কোনো রাস্তা
বহু মানুষের কর্মসংস্থানের হয়েছে ব্যবস্থা।
তবে বেড়েছে আয়লার মতো ঝড়ের দাপট
সৃষ্টি হয়েছে মানুষের জীবন জীবিকায় সংকট।
ঝড়ে সর্বস্ব হারিয়ে অনেকে না- হয় পথে বসছে
কে জানে, আগামীতে বসবে আরো কত!
হুজুর, বলছি না একটুও মিছে
ভাবুন, বেকারদের দুর্দশা ঘোচাতে সমুদ্র সৈকতে
কত মানুষের রুটি রোজগারের ব্যবস্থা হয়েছে।
হুজুর, আমি না-ঘুমলে সে কী সম্ভব হতো?
উন্নয়নকে এখন পথে বসে ফুঁপিয়ে কাঁদতে হতো
হুজুর, এসব শুনে জেনেবুঝে এখন বলুন,
আমি কি কাজ করিনি গর্ব করার মতো?