বার্ধক্যে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, চোখে পড়ছে ছানি।
কী জানি, হয়তো চেনাজানা; তাঁকে দেখেছি
যৌবনকাল থেকে বিচারকের আসনে।
যষ্টি-নির্ভর, করি কী? লাঠিতে ভর দিয়েই
হয়েছি তাঁর মুখোমুখি।
বলেছি তাঁকে, ‘হুজুর, ব্যাধের বানে বিদ্ধ
পশুর মতো নির্যাতিত, মনটা ক্ষতবিক্ষত।
শুধু আমি একাই নই, লাখে লাখে, এক
দশকেরও আগের ঘটনা।
ন্যায়বিচারের আশায় নির্যাতিত সকলেই
দলবদ্ধভাবে জনস্বার্থ মামলায় সম্ভবত
আপনার আদালত কক্ষে হাজির হয়েছি
ন্যায়বিচারের আশায়।
সেসময় থেকে এযাবৎ বারংবার আপনার
আদালতকক্ষে হাজির হতে হয়েছে সুদীর্ঘ
এগার বছর।
হুজুর, যতদূর মনে পড়ে একটি আলোচনা
সভায় আপনি নিজে শুনিয়েছিলেন, ‘বিচার
বিলম্বিত হলে ন্যায়বিচার প্রত্যাখ্যান করার
সামিল।’
হুজুর, দেখুন ঢিল-ছোঁড়া দূরত্বে ওই বিশাল
অশ্বত্থ-গাছের নিচে সুবিচারের প্রত্যাশী কত
মানুষ।
তারাও দীর্ঘকাল বিভিন্ন মামলায় আদালতে
হাজির হয়েও আজ অবধি পায়নি ন্যায়বিচার,
বিলম্বিত লয়ে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায়।
এখন তারা ক্ষোভে যেন ঘটাচ্ছে অগ্নুৎপাত,
সমবেতভাবে করছে চিল-চিৎকার।
হুজুর, এ কথা জানতে ইচ্ছা করে জনস্বার্থ
মামলাগুলোর মুশকিল আসান করতে গিয়ে
করলেন কী?
বলবেন, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় কত জনস্বার্থ
মামলা যেখানে সরাসরি শত সহস্র মানুষের
স্বার্থ এক সূত্রে বাধা, দোলকের মতো দুলবে
আর কত?
আদালতে ন্যায়বিচারে সেগুলোর ভবিষ্যৎ কী?
দেখেছি, তিনি নির্বাক। চলে গেলেন মাথা নিচু
করে, কোনও উত্তর না-দিয়ে।
কি জানি, হয়তো বলবার মতো তাঁর কিছুই
ছিল না।